নুসরাত ফরিয়াকে গ্রেপ্তার করে গণহত্যার বিচারের বিষয়টিকে হালকা করা হচ্ছে: রাশেদ খান

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান (Rashed Khan) বলেছেন, অভিনেত্রী নুসরাত ফরিয়াকে (Nusrat Faria) গ্রেপ্তার করে মূলত ১৯৭১ সালের গণহত্যার বিচারের বিষয়টি হালকা করা হচ্ছে। সোমবার (১৯ মে) রাতে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক মন্তব্যে তিনি আরও বলেন, যদি নুসরাত ফরিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে একইভাবে তিশা (Tisha) ও ফারুকীরও গ্রেপ্তার হওয়া উচিত—কারণ তারাও আওয়ামী লীগ সরকারের কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছেন।

ফেসবুক পোস্টে রাশেদ খান লেখেন, “নুসরাত ফরিয়াদের গ্রেপ্তার করে হাস্যকর পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে। ডামি ৩০০ এমপি ধরার খবর নেই, তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার কোনো উদ্যোগ নেই। বরং নুসরাত ফরিয়াদের গ্রেপ্তার করেই আলোচনার ফোকাস সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা মূলত গণহত্যার বিচারের গুরুত্বকে খাটো করে দেখানো।”

তিনি আরও বলেন, “যেখানে নসরুল হামিদের বিপুল লুটপাটের সম্পদ পাহারা দিচ্ছেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের স্বামী আবু বকর সিদ্দিক সাহেব, সেখানে সরকার ডাকাত না ধরে ছিঁচকে চোর ধরতেই ব্যস্ত। অথচ রেজওয়ানারাই আবার সাবের-মান্নানদের জামিন তদবির করেন। উপদেষ্টা পরিষদে আছেন আলী ইমাম মজুমদারের মতো শেখ মুজিব ভক্তরাও।”

এই অবস্থায় তিনি সরকারের উদ্দেশে প্রশ্ন তোলেন, “ডাকাতদের প্রোটেকশন দিয়ে ছিঁচকে চোর ধরা কোন ধরনের ন্যায়বিচার?”

এদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (পশ্চিমাঞ্চল) মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম (Sarjis Alam) নারীদের অধিকারের পক্ষে অবস্থান নিলেও এক্ষেত্রে সতর্ক বার্তা দিয়েছেন। ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “নারীদের অধিকার রক্ষায় যৌক্তিক সব দাবিতে সর্বাত্মক সমর্থন থাকবে। তবে সেসবের আড়ালে যদি সমকামিতা, ট্রান্সজেন্ডার বা এলজিবিটিকিউ কালচারের মতো ধ্বংসাত্মক প্রবণতাগুলোর প্রচার হয়, তাহলে আমাদের প্রতিরোধ গড়েই তুলতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “যারা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র ধ্বংস করতে চায়, তাদের মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন। এই ক্যান্সার ধীরে ধীরে সমাজের গভীরে ঢুকে পড়ছে। এটা প্রতিরোধ করাই এখন সময়ের দাবি।”

সারজিস আলমের এই মন্তব্যে সমাজের একাংশে যেমন সমর্থন জুটেছে, তেমনি এলজিবিটিকিউ অধিকার রক্ষাকারীরা এটিকে বৈষম্যমূলক ও ভয়ভিত্তিক মন্তব্য বলে আখ্যা দিয়েছেন।

সামগ্রিকভাবে, নুসরাত ফরিয়ার গ্রেপ্তার প্রসঙ্গ হয়ে উঠেছে একটি বড় রাজনৈতিক ও সামাজিক বিতর্কের ইন্ধন। বিষয়টি এখন শুধু একজন অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত পরিণতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে বৃহৎ রাজনৈতিক ইঙ্গিত এবং আদর্শিক সংঘাত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *