“বিএনপি যদি ফেলও করে, তবুও আমাদের একটা বিএনপি লাগবে“ : রেজাউল করিম রনি

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপির অস্তিত্বকে ‘অপরিহার্য’ আখ্যা দিয়েছেন বিশ্লেষক রনি (Roni)। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি যদি রাজনৈতিকভাবে ফেলও করে, তবুও আমাদের একটা বিএনপি লাগবে।” তাঁর মতে, দেশের রাজনীতিতে মধ্যপন্থার ভারসাম্য রক্ষায় এখনো বিএনপিই একমাত্র আংশিকভাবে সে ভূমিকা রাখছে।

রনি স্পষ্টভাবে বলেন, “জামায়াতের আওয়ামী বিরোধিতা, গণসংহতির বিরোধিতা কিংবা এক হকার বা এক নারীর আওয়ামী বিরোধিতা—এসব একরকম নয়। কিন্তু সবাই কোনও না কোনওভাবে আওয়ামী বিরোধী। এই পরিস্থিতিতে একমাত্র ভারসাম্যপূর্ণ বিরোধী শক্তি হিসেবে এখনও পর্যন্ত বিএনপি কিছুটা হলেও প্রাসঙ্গিক।”

তিনি আরো জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে একধরনের “ডানপন্থী অভ্যুত্থান” সংঘটিত হয়েছে, যা গণতন্ত্রের পরিপন্থী। “কেউ কেউ এটিকে ‘জনগণের ম্যান্ডেট’ হিসেবে চিত্রায়িত করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বাস্তবে এটা রাজনৈতিক কুশিক্ষা ছাড়া কিছুই নয়। এটি নতুন ধরণের এক ফ্যাসিবাদী প্রবণতার জন্ম দিচ্ছে,” বলেন রনি।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, “একটি বিশেষ সিন্ডিকেটভিত্তিক গোষ্ঠী চায়—নির্বাচনের আর প্রয়োজন না থাকুক। তারা চায় একটি স্থায়ী হুজুগ ও বিপ্লবী উত্তেজনার বাতাবরণে ক্ষমতা নিজেদের কব্জায় রাখতে। যেভাবে একসময় আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রাজনৈতিক হুজুগে পরিণত করেছিল, আজ সেই একই কৌশলে ডানপন্থার হুজুগ তোলা হচ্ছে।”

রনি দাবি করেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি একসময় পুরোপুরি “আওয়ামীকরণ” হয়ে গিয়েছিল। এখন সেখানে মধ্যপন্থী রাজনীতির জন্য একটি ফাঁকা স্থান তৈরি হয়েছে, যা পূরণ না হলে ভারসাম্যহীনতা দীর্ঘস্থায়ী হবে। “বিএনপি হয়তো সেই স্থান পূরণে পুরোপুরি সফল নয়, কিন্তু অন্তত বিএনপি ধাঁচের একটি শক্তির উপস্থিতি এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।”

সাক্ষাৎকারের একেবারে শেষ অংশে রনি বলেন, “এই বিএনপি যদি রাজনৈতিকভাবে ফেইলও করে, তাও একটা বিএনপি লাগবে। কারণ একটি ভারসাম্যপূর্ণ গণতন্ত্র গড়তে হলে শক্তিশালী, মধ্যপন্থী একটি বিরোধী দল থাকা একান্ত প্রয়োজন।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *