‘জুলাই কারো বাপের না, কোনো রাজনৈতিক দলের একক সম্পত্তিও না’—এই বলে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র এককভাবে পাঠ করার উদ্যোগের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন নাফসিন মেহেনাজ আজিরিন (Nafsin Mehenaz Azirin)। সম্প্রতি নিজের ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, “জুলাই সর্বদলীয় আমজনতার, রাষ্ট্রীয়ভাবেই তার চেতনা এবং ঘোষণাপত্রকে মর্যাদা দেওয়া উচিত।”
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাফসিন স্পষ্ট ভাষায় জানান, “এই ঘোষণাপত্র কোনো একক দল পাঠ করলে, তা হবে রাজপথে জীবন বাজি রেখে আন্দোলনকারী হাজারো শহীদ ও আহত মানুষের প্রতি অবমাননা। এই জুলাই কারো ব্যক্তি বা দলীয় সম্পত্তি না। যারা বুকে সাহস নিয়ে আন্দোলন করেছে, তারা সবাই এই বিপ্লবের অংশীদার।”
নাফসিন বলেন, “১৮ জুলাই সারা বাংলাদেশ দেখেছে, কিভাবে গাট্টি-বস্তা বেঁধে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ছাড়তে হয়েছে মানুষকে। আমরা ছিলাম সেই আন্দোলনের সৈনিক, যাদের স্যার একবার মারলে চারবার ফিরিয়ে দিতাম। সেই সাহস আর ত্যাগের গল্পের নাম জুলাই।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আপনারা কারা, যে সাহসে এককভাবে এই ঘোষণা পাঠ করতে যাচ্ছেন? কোন শক্তিতে এই সিদ্ধান্ত? এই অভ্যুত্থান শুধু কোনো রাজনৈতিক দলের নয়—এটা শহীদ, আহত, স্কুল-কলেজের ছাত্র, মাদরাসা, সাংবাদিক, শ্রমিক, সেনা অফিসার—সব শ্রেণি-পেশার মানুষের।”
নাফসিন স্পষ্ট করে বলেন, “জুলাই ঘোষণা আসতে হবে সরকারের মাধ্যমে, রাষ্ট্রীয়ভাবে। সেই ঘোষণাপত্র থাকতে হবে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের প্রতিনিধিত্বে, সংবিধানের ভিত্তিতে। রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য ‘জুলাই চেতনা’কে বিক্রি করা চলবে না। এমন করলে মানুষ জুলাই থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, আর এই ইতিহাস প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।”
তার বক্তব্যে জোরাল এক আবেদন ছিলো—“আমাদের শহীদ ও আহত ভাইদের রক্তে অর্জিত এই ‘জুলাই’ যেন সবার মনে চিরজাগরুক থাকে। সেই ভালোবাসা যেন আজীবন অটুট থাকে।”
এমন একসময় এই ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, যখন দেশের রাজনীতিতে ‘জুলাই চেতনা’ ঘিরে দখলদারিত্বের অভিযোগ উঠছে। অনেকেই মনে করছেন, নাফসিনের এই বার্তা জুলাই আন্দোলনের বাস্তবতা ও ইতিহাসের এক নিখুঁত প্রতিফলন।