আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন—এই পূর্বানুমানকে ভিত্তি ধরে এখন থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী (Law Enforcement Agencies)কে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বলেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (Ministry of Home Affairs)। নির্বাচন ঘিরে সম্ভাব্য সহিংসতার ঝুঁকি এড়াতে সেপ্টেম্বর মাসে একবার এবং নির্বাচনের ঠিক আগে আরেকবার—এই দুই দফায় বড় পরিসরে মহড়া আয়োজনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত কোর কমিটির এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সূত্র। সভায় অংশ নেওয়া একজন উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট করে বলেন, “নির্বাচনে সহিংসতা হবে, এটা ধরেই প্রস্তুতি নিতে হবে।”
তিনি আরও জানান, শুধুমাত্র পুলিশ বা র্যাব নয়, বরং নির্বাচনকেন্দ্রিক দায়িত্বপ্রাপ্ত সব সরকারি সংস্থার অংশগ্রহণে এই মহড়াগুলো পরিচালিত হবে। লক্ষ্য থাকবে, সহিংসতা শুরুর আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং যদি সহিংসতা হয়, তাহলে দ্রুত এবং সমন্বিতভাবে তা দমন করা।
সভায় উদাহরণ দিয়ে বলা হয়, “ধরে নিন একটি ভোটকেন্দ্রে হঠাৎ সহিংসতা শুরু হলো। সেই মুহূর্তে মাঠপর্যায়ে থাকা বাহিনীগুলো কীভাবে যৌথভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে, কে কোন দায়িত্ব নেবে—তা মহড়ার মাধ্যমে আগে থেকেই অনুশীলন করা জরুরি।”
বিশেষ করে নির্বাচনের দিনগুলোতে সহিংসতার আশঙ্কা মাথায় রেখে প্রিসাইডিং অফিসার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও আনসারসহ নির্বাচনী নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত সব পক্ষের মধ্যে দ্রুত তথ্য আদান–প্রদান ও কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যৌথ কার্যক্রম চূড়ান্ত করা হবে।
নির্বাচনের সময় সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এর আগে থেকেই মাঠপর্যায়ে বেশ কিছু প্রাথমিক দিকনির্দেশনা পাঠানো হয়েছিল। এবার সেই পরিকল্পনারই পরবর্তী ধাপ হিসেবে মহড়াগুলোকে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ভোটের প্রস্তুতি নিতে প্রাথমিক সময়সূচি নির্ধারণ শুরু করলেও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে দিন তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। তবে সরকারি পর্যায়ের প্রস্তুতি দেখে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই হতে পারে ভোট গ্রহণ।