আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালত অবমাননার মামলায় শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)-কে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই মামলায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুল (Shakil Akand Bulbul)-কে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২ জুলাই) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণা করে।
প্রসঙ্গত, আদালত অবমাননার এই মামলার সূত্রপাত ঘটে এক ভাইরাল অডিওকে কেন্দ্র করে। অডিওতে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়—“আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি।” এই বক্তব্যের পর তা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয় এবং বিষয়টি নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (CID) ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে অডিওর সত্যতা নিশ্চিত করে। এরই প্রেক্ষিতে, ৩০ এপ্রিল চিফ প্রসিকিউটর আদালতে অবমাননার অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগ গ্রহণের দিন ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্তদের ১৫ মের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু নির্ধারিত দিনে কোনো জবাব না আসায় ২৫ মে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় শেখ হাসিনা ও শাকিল আকন্দ বুলবুলকে।
আদালত জানায়, আইনের বিধান অনুযায়ী এমন মামলায় আসামিপক্ষে সরকারি খরচে আইনজীবী নিয়োগের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও, ন্যায়বিচারের স্বার্থে শেখ হাসিনার পক্ষে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনাল অ্যামিকাস কিউরি (Amicus Curiae)—একজন ‘আদালত বন্ধু’—নিয়োগ দেয় শুনানির সময়। প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা শাকিল বুলবুল আদালত অবমাননার মতো গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছেন। এই মামলার মূল প্রেক্ষাপট ছিল জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত একটি মন্তব্য, যা আদালতের মতে বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার প্রয়াস।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার সময় আদালত স্পষ্ট করে বলে, এমন মন্তব্য শুধু বিচার বিভাগকে অপমান করে না, বরং ন্যায়বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। তাই এই সাজা দেওয়া হয়েছে উদাহরণমূলক বার্তা দেওয়ার লক্ষ্যে।