চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম (Tajul Islam) বলেছেন, একটি জাতি যদি তার বীর সন্তানদের স্মৃতিকে ধরে না রাখে, তবে সে জাতি কখনো উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারে না। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যারা জাতির জন্য জীবন দিয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগকে যারা ম্লান করতে চাইবে কিংবা জাতির স্মৃতি থেকে মুছে দিতে চাইবে, তারা হবে এই শতাব্দীর নব্য মীর জাফর।
তাজুল ইসলাম বলেন, “যদি আমরা আমাদের জাতীয় বীরদের ভুলে যাই, তবে ভবিষ্যতে আবার যখন কোনো স্বৈরশাসন চেপে বসবে, তখন আর আনাস, মুগ্ধ, আবু সাঈদ, ওয়াসিমরা জীবন দিতে এগিয়ে আসবে না। জীবন দেওয়ার জন্য এই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরকে আমরা একবার উপস্থাপন করেছিলাম। যারা ১৪০০ শহীদ হয়েছেন, তারা জাতির সর্বোত্তম উপহার ছিল, যাদের রক্ত জাতির কল্যাণে উৎসর্গ করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “এই শহীদদের ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টাকারীরা, জুলাইয়ের বিপ্লব ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে যারা বাধা দেবে, তারা ইতিহাসে নতুন মীর জাফর হিসেবে পরিচিত হবে। জুলাইয়ের স্বপ্ন কোনোদিন ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না, কারণ এই স্বপ্ন শতাব্দীতে একবার আসে। সেই অন্ধকার সময়ে রাজনীতিবিদরা ব্যর্থ হয়েছিলেন, ব্যর্থ হয়েছিল দেশের সমস্ত রাজনৈতিক কৌশল। তখন মুগ্ধ, আবু সাঈদ, আসিফ, নাহিদরা জীবন দিতে প্রস্তুত না হলে আমরা হয়তো এই অন্ধকার কাটিয়ে উঠতেই পারতাম না।”
তিনি বলেন, “এই শহীদরা আমাদের জাতির সর্বোৎকৃষ্ট সম্পদ। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে প্রয়োজনে রাজপথে নামতে পারে, তাই আমাদের এই আত্মত্যাগকে স্মরণে রাখতে হবে। এই ঋণ কোনোদিন শোধ হবে না। শহীদদের প্রতি জাতির কৃতজ্ঞতা চিরন্তন।”
বিচারের অগ্রগতি প্রসঙ্গে চিফ প্রসিকিউটর জানান, “আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। বিশেষ করে চানখারপুল (Chankharpul) এলাকায় ৫ আগস্টে ছয়জনকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ আসছে আগামী ১৪ তারিখে। এরপরই শুরু হবে সাক্ষ্যগ্রহণ। যারা নির্বিচারে পাখির মতো আমাদের সন্তানদের হত্যা করেছে, তাদের প্রত্যেককে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।”
তাজুল ইসলাম আরো বলেন, “এই বিচার হবে দৃষ্টান্তমূলক, যাতে কেউ ভবিষ্যতে আমাদের সন্তানদের উপর হাত তোলার দুঃসাহস দেখানোর চিন্তাও না করে। আমরা প্রমাণ করতে চাই, এ জাতি তার শহীদ সন্তানদের ভুলে যায় না।”