সিলেটের সুবিদবাজারে আত্মগোপনে থাকা দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান প্রদীপ রায়কে স্থানীয় জনতা হাতেনাতে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। বহুল আলোচিত জলমহাল হত্যা মামলাসহ অন্তত সাতটি মামলার পলাতক আসামি এই নেতা বুধবার (৯ জুলাই) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছেন।
মঙ্গলবার গভীর রাতে সিলেট নগরীর লন্ডনি রোডের একটি ভাড়া বাসায় অবস্থানকালে স্থানীয়রা তার উপস্থিতি টের পেয়ে তাকে আটক করে। পরে খবর পেয়ে জালালাবাদ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে হেফাজতে নেয় বলে নিশ্চিত করেন থানার ওসি মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ।
স্থানীয়দের মতে, দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকা এই নেতা এলাকায় বিভিন্ন সময় ক্ষমতার অপব্যবহার ও জলমহাল দখল কেন্দ্রিক সহিংসতার কারণে বিতর্কিত ছিলেন। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দিরাইয়ের কুলঞ্জ ইউনিয়নের জারুলিয়া জলমহাল ঘিরে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। এ ঘটনায় তাকে আসামি করা হলেও পরবর্তীতে পুলিশের চার্জশিটে তিনি অব্যাহতি পান।
তবে ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর দিরাইয়ের ভাটিপাড়া জলমহাল ঘিরে আরেকটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে একজন নিহত হন এবং সেই হত্যা মামলায়ও তার নাম রয়েছে। পুলিশ জানায়, বর্তমানে সিলেট ও সুনামগঞ্জ মিলিয়ে তার বিরুদ্ধে সাতটি মামলা রয়েছে, যার বেশিরভাগই জলমহাল দখল ও সহিংসতার অভিযোগে দায়ের।
উল্লেখ্য, প্রদীপ রায় দীর্ঘদিন দিরাই-শাল্লা অঞ্চলের রাজনীতিতে প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সর্বশেষ তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার ভাই বিশ্বজিৎ রায়ও দিরাই পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে ২০২3 সালের ৫ আগস্টের পর থেকে দুই ভাই-ই গা-ঢাকা দেন।
সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন, প্রদীপ রায়কে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়ভাবে এই গ্রেপ্তারিকে ‘প্রতিবাদের প্রতীক’ হিসেবে দেখছেন অনেকে, যেখানে জনতার সক্রিয় ভূমিকাই ছিল মূল।