জাতীয় সংসদে শুধুমাত্র নারীদের জন্য আলাদা আসনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাশেদ খাঁন (Rashed Khan)। রাজনৈতিক দলগুলোকে নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে বাধ্যতামূলক কোটা না রেখে, নমিনেশন প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন চাইলে একটি আইন করতে পারে—যেখানে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে অন্তত ১০ থেকে ১৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হবে।
মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন এ মন্তব্য করেন। তিনি লিখেন, “যে সিস্টেম নিয়ে এখন আলোচনা চলছে, সেটাও এক ধরনের কোটা—বরং কোটার আধুনিক ফরমেট।” তাঁর মতে, রাজনৈতিক দলগুলোতে নারীদের জন্য বাধ্যতামূলক মনোনয়ন কোটা চালু হলে, আলাদা নারী আসনের প্রয়োজনীয়তা থাকবে না।
রাশেদ আরও বলেন, “চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে আমরা দেখেছি বহু নারী রাজপথে নেমে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীরা পুরুষদের সঙ্গে সমানতালে অথবা তার চেয়েও ভালো করছে। চাকরিতেও নারীরা পিছিয়ে নেই। তাহলে জাতীয় সংসদে আলাদাভাবে নারী আসনের যৌক্তিকতা কোথায়?”
তিনি মনে করেন, আলাদা নারী আসন নারীদের “দুর্বল” হিসেবে উপস্থাপন করে এবং তা নারীদের প্রকৃত ক্ষমতায়ন নয় বরং তাদের ‘কোটার জালে বন্দি’ করে রাখার চেষ্টা। তাঁর ভাষায়, “রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ন্যূনতম মনোনয়ন বরাদ্দের আইন হতে পারে। কেউ চাইলে ৫০ শতাংশ নারী প্রার্থী দিতেও পারে।”
এই বক্তব্য এসেছে এমন এক সময়, যখন জাতীয় ঐক্যমত কমিশনে সংসদে নারীদের জন্য ১০০ আসন সংরক্ষণের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এতে একমত হলেও, এই আসনগুলো সরাসরি নির্বাচন নাকি দলীয় মনোনয়নের মাধ্যমে পূরণ হবে—তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে।
বিএনপি (BNP) জানায়, তারা ১০০ নারী আসনের পক্ষে থাকলেও তা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নয়, বর্তমান পদ্ধতির মতোই মনোনয়নের মাধ্যমে পূরণে আগ্রহী। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ (Salahuddin Ahmed) সোমবার কমিশনের সংলাপ শেষে গণমাধ্যমকে বলেন, “আমরা সংসদে ১০০ নারী আসনের পক্ষে। তবে সরাসরি নয়, বিদ্যমান পদ্ধতিতেই তা হওয়া উচিত।”
জাতীয় সংসদে বর্তমানে সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৫০। নতুন প্রস্তাবে এই সংখ্যা দ্বিগুণ করার চিন্তা করছে সরকার ও রাজনৈতিক মহল। কিন্তু এর পদ্ধতি এবং কাঠামো নিয়ে আলোচনা এখনও চলমান।