‘মরদেহ গুম’ নিয়ে সরকারের নিরবতা প্রশ্নবিদ্ধ: নাহিদ ইসলাম

রাজধানীর বাংলামোটরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘মাইলস্টোন স্কুল’ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক ঘটনার গভীর শোক প্রকাশ করেছেন নাহিদ ইসলাম (Nahid Islam), যিনি জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizens Party) বা এনসিপি’র আহ্বায়ক। শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে তিনি জনগণ ও শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। সরকারকে দ্রুত এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তা মেনে নেওয়া উচিত ছিল।” তিনি অভিযোগ করেন, সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত না নেওয়ার কারণে পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যেও সমন্বয়হীনতার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, “এক উপদেষ্টা অন্য উপদেষ্টাকে ফোন দিয়েও পাচ্ছে না। এটা একটা রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা।”

তিনি আরও জানান, মাইলস্টোন ইস্যুতে ‘নিষিদ্ধ ঘোষিত’ ছাত্রলীগ নেতারা সচিবালয়ে প্রবেশ করে আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। ছাত্রলীগ (Chhatra League)-এর এই ভূমিকা এবং সচিবালয়ে ঢোকার মতো ঘটনা প্রশাসনিক কাঠামোর দুর্বলতাকেই তুলে ধরছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

‘মরদেহ গুম’ প্রসঙ্গে স্পষ্ট বক্তব্য না দেওয়ায় সরকারের সমালোচনা করে নাহিদ বলেন, “আমরা লাশ গুম সংক্রান্ত একটি বক্তব্য দেখেছি, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নির্ভরযোগ্য ও বিশদ ব্যাখ্যা আসেনি। সরকারের উচিত ছিল জনগণকে জানানো যে, আসলে কী ঘটেছে।”

তিনি দাবি করেন, দুর্ঘটনার সময় ঠিক কতজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত ছিল, সেটি প্রকাশ করা দরকার। ক্যাজুয়ালিটির সংখ্যা আপডেট করে, গুজব ও বিভ্রান্তি রোধে তথ্য স্বচ্ছভাবে প্রচার করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “এই ঘটনা তদন্তে নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করতে হবে, যেখানে শুধু সরকারি সদস্য নয়, স্কুল কমিটির প্রতিনিধিরাও থাকতে হবে।” শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্বজ্ঞানহীনতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “২১ জুলাই রাত তিনটায় জানতে হয় এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত। তখন উপদেষ্টারা কেউ কাউকে ফোনে পাচ্ছে না—এটা রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা নষ্ট করে।”

তিনি দেশের চলমান পরিস্থিতিকে ‘ইমার্জেন্সি’ বা সংকটকালীন অবস্থা হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, “ছাত্রসমাজ মানসিক ট্রমার মধ্যে রয়েছে। সেখানে একটি সিদ্ধান্ত নিতে সরকার এত দেরি করলো কেন?”

আহত শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি পুনর্বাসন পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “যে সব শিক্ষার্থী আহত হয়েছে, তাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসন কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি, ঘটনার সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের একটি নির্ভরযোগ্য তালিকা প্রকাশ করাও জরুরি।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *