[যুক্তরাষ্ট্র (United States)] শেষমেশ বাংলাদেশের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত শুল্কহার ১৫% কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। আগে এই হার ছিল ৩৫%, যা [ট্রাম্প প্রশাসন (Trump Administration)]ের সময় নির্ধারিত হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ওয়াশিংটনে দুই দেশের মধ্যে তৃতীয় দফার শুল্ক আলোচনা শেষে [হোয়াইট হাউস (White House)] এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
শুল্ক আলোচনার এই দফার আগে গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে আমদানি হওয়া কিছু পণ্যের ওপর ৩৭% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিল। তবে ব্যাপক কূটনৈতিক আলোচনার পর সেটি তিন মাসের জন্য স্থগিত করে দেয় ওয়াশিংটন। এই সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একাধিক দেশ আলাদা আলাদা আলোচনা চালিয়ে যায়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও ব্যাপক প্রস্তুতি চলে।
মেয়াদ শেষ হলে নতুন করে ট্রাম্প প্রশাসন ৩৫% শুল্ক পুনর্বহাল করে, যদিও তার সঙ্গে ২% কমানোর ঘোষণা আসে। এরপরই পাল্টা আলোচনায় নামে বাংলাদেশ। টানা তিন দিন যুক্তরাষ্ট্রের [বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তরের (USTR)] সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল। এ বৈঠকে নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা [শেখ বশির উদ্দিন (Sheikh Bashir Uddin)]।
চূড়ান্ত আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র ১৫% শুল্ক কমিয়ে ২০% নির্ধারণ করে, যা যুক্তরাষ্ট্রে আরোপিত গড় শুল্কহারের (১৫%) চেয়ে কিছুটা বেশি হলেও আগের তুলনায় সহনীয়। এ সিদ্ধান্তে আপাতত কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের মধ্যে।
বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন বলেন, “আমরা ২০% এর নিচে শুল্ক প্রত্যাশা করেছিলাম, তবে আগের তুলনায় এটি একটি উল্লেখযোগ্য ছাড়। এখন আমরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতামূলক থাকতে পারব।”
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র একই সময়ে ভারতীয় পণ্যে ২৫%, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়ার পণ্যে ১৯%, এবং শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামের পণ্যে যথাক্রমে ২% ও ২% শুল্ক আরোপ করেছে। ফলে তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের জন্য নতুন শুল্কহার কিছুটা বেশি হলেও, রপ্তানির বড় বাজার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের অবস্থান এখনও গুরুত্বপূর্ণ থাকছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই শুল্কহ্রাস সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতায় একটি ইতিবাচক অগ্রগতি। তবে ভবিষ্যতে আরও ছাড় আদায়ের কূটনৈতিক চেষ্টা জারি রাখতে হবে।