সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল (Masud Kamal) বলেছেন, চলমান আন্দোলনকে নিজেদের কৃতিত্ব হিসেবে দাবি করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তার মতে, এ আন্দোলন প্রকৃত অর্থে সাধারণ জনগণের, কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর নয়।
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় মাসুদ কামাল বলেন, “আপনারা কেন ক্রেডিট নেওয়ার চেষ্টা করছেন? এই আন্দোলনটা কি আপনাদের ছিল? আপনাদের আন্দোলন ছিল কেবল কোটা বিরোধী। সেই দাবিগুলো সরকার মেনে নেওয়ার পর তো আপনারা নিজেরাই আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন।”
তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “জনগণের আন্দোলন তখনও চলছিল, এখনও চলছে। সাধারণ মানুষ কোনো ক্রেডিট দাবি করেনি, অথচ আপনারা এসে দাবি করছেন আন্দোলনের কৃতিত্ব।”
মাসুদ কামাল আরও অভিযোগ করেন, বর্তমানে নাগরিকদের সমন্বয়ে যেই তথাকথিত সরকার গঠিত হয়েছে, যা ড. ইউনূস (Dr. Yunus)-এর নেতৃত্বে বলা হচ্ছে, তারা এখনো একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের তারিখ পর্যন্ত ঘোষণা করতে পারছে না। তার মতে, “সংস্কারের নামে অপ্রয়োজনীয়ভাবে সময় ক্ষেপণ করা হচ্ছে, বাস্তবিক কোনো অগ্রগতি নেই।”
তাঁর বক্তব্যে এনসিপি (NCP)-র ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তিনি বলেন, “এনসিপি বিএনপির সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি করছে, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের সঙ্গেও বিরোধ করছে। তারা কি এত বড় শক্তি যে সবার সঙ্গে বিরোধে গিয়ে তাদের অবস্থান মজবুত হবে?”
স্মরণ করিয়ে দিয়ে মাসুদ বলেন, “যখন ডিবির হারুন ছয়জন সমন্বয়ককে ধরে নিয়ে যায়, তখন তারা স্বাক্ষর করে যৌথ বিবৃতিতে আন্দোলন প্রত্যাহার করে। এরপরও আন্দোলন থামেনি। সেই আন্দোলন এই ছয়জন করেনি, করেছে সাধারণ মানুষ।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এই আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলন। এর মূল চালিকা শক্তি জনগণ। পরে এই ছয়জন বা অন্যান্য গোষ্ঠী এসে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে মাত্র।”
মাসুদ কামালের মতে, “ছাত্র, কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রাক্তন নেতাকর্মী, বিএনপি, জামায়াত, শিবির, ছাত্রদল—সবাই এতে অংশ নিয়েছে। অথচ এখন কেউ কেউ দাবি করছেন, একমাত্র তারাই এই আন্দোলন করেছেন। এ দাবি ভিত্তিহীন। আপনারা চাইলে আন্দোলন থামাতে পারতেন না। দেশের মানুষের ওপরে আপনাদের নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এখন বলছেন, চাপে পড়ে সাইন করেছেন? বিএনপির অনেক নেতাকেও ধরে নিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু কেউ তো এমন সাইন করেনি।”
তার শেষ মন্তব্যটি ছিল কঠোর: “তখনও আপনারা আন্দোলনের নেতা ছিলেন না, এখনও নন। দাবি করলেই দাবিদার হওয়া যায় না। এটা মাথায় রাখতে হবে।”