জুলাই ঘোষণাপত্র – নির্বাচনের ঘোষণা দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কেই আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই : সালাহউদ্দিন আহমেদ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)-এর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ ও জুলাই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ (Salahuddin Ahmed) বলেছেন, এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে যে দোদুল্যমান ও অনিশ্চিত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা এখন কেটে গেছে।

মঙ্গলবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই প্রতিক্রিয়া জানান। তার ভাষায়, “আজকে প্রধান উপদেষ্টা দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জাতির সামনে উপস্থাপন করেছেন। একটি হলো—জুলাই ঘোষণাপত্র, এবং অন্যটি হলো জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের মাধ্যমে আসন্ন নির্বাচনের ঘোষণা। আমরা দুটি বিষয়কেই আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই।”

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্রকে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই বিষয়টি সংবিধানে যথোপযুক্ত স্থানে সংযোজিত করা হবে। আমরা আগেও এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের জাতীয় বীরের মর্যাদা প্রদান আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, সেটি পূরণ হওয়ায় আমরা কৃতজ্ঞ।”

জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে, অর্থাৎ পবিত্র রমজানের আগে নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা—তা একটি সাহসী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ। নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠানো এবং নির্বাচন তফসিল ঘোষণার যে ইঙ্গিত এসেছে, তা জাতির জন্য আশার আলো।”

তিনি আরও যোগ করেন, “যারা মনে করছিলেন দেশে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে, তাদের জন্য এই ঘোষণা একটি সুস্পষ্ট বার্তা। এতে করে দেশ নির্বাচনমুখী একটি পরিবেশে প্রবেশ করবে, এবং একটি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের ভিত্তি তৈরি হবে।”

বিএনপির এ নেতা বলেন, “আমরা আশা করছি—এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হবে। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ববাসীকে দেখানো যাবে, বাংলাদেশ একটি পরিপক্ব গণতন্ত্রে পরিণত হচ্ছে।”

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আরও বেশি প্রতিষ্ঠিত হবে। বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সার্বিক অর্থনীতি ও প্রশাসনে গতিশীলতা আসবে। দেশের মানুষ নিশ্চিন্তে সামনে এগিয়ে যেতে পারবে।”

রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে এবং নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষণাকে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হিসেবে দেখছে বিএনপি। এখন অপেক্ষা আগামীদিনে নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম ও রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ ঘিরে নতুন গতিপথের।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *