হলে বাম দল ছাড়া সব দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ চান উমামা ফাতেমা

বামপন্থী ছাত্রসংগঠন ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সদস্য সচিব উমামা ফাতেমার বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর রাজনীতি ছাড়া অন্য সকল দলের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর লেখা এক দরখাস্তে তিনি এ আবেদন জানান।

এর আগে শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে ছাত্রদল আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করে। এ ঘটনায় হলে থাকা অনেক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কারণ গত বছরের ১৭ জুলাই হলে সকল প্রকারের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। এর পর থেকে হলে রাজনীতি থাকবে কিনা কিংবা এর কাঠামো কেমন হবে তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এর মধ্যে একসাথে সবগুলো হলে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রথম কেউ কমিটি ঘোষণা করার ঘটনা ঘটেছে।

কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষকে দেওয়া দরখাস্তে উমামা ফাতেমা লেখেন, “কবি সুফিয়া কামাল হলে আমরা গত বছরের ১৭ জুলাই সম্মিলিত আন্দোলনের মাধ্যমে প্রশাসন থেকে এই মর্মে প্রতিশ্রুতি নিতে সমর্থ হই যে, সুফিয়া কামাল হলে সকল ধরনের বাজনীতি (ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, শিবির, বাগছাস) নিষিদ্ধ থাকবে।

গত এক বছরে শিক্ষার্থীদের সাথে প্রশাসনের এই চুক্তি বলবৎ ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে কতিপয় সংগঠন গুপ্তভাবে তাদের সাংগাঠনি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে হলে। অতঃপর আজ সকালে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী ছাত্রদল হলে সাত সদস্যবিশিষ্ট হল কমিটি ঘোষণা করেছে।

তিনি লেখেন, “আমরা শিক্ষার্থীর মনে করি, তাঁদের এইসব কার্যকলাপ, জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে সৃষ্টি হওয়া উল্লেখিত চুক্তিকে ভঙ্গ করে, যা স্পষ্টত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণার সামিল।”

এর আগে তিনি এক ফেসবুক স্টাটাসে ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শুক্রবার রাতের মধ্যে এটি স্থগিত করার আল্টিমেটাম দেন।

উমামা ফাতেমার লেখা এ দরখাস্তে দেখা যায়, চারটি সংগঠনের নাম উল্লেখ করে তিনি সেগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু বাম সংগঠনগুলো নিয়ে তার কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। যদিও হলে বামপন্থী শিক্ষার্থীরাও অবস্থান করছেন। কোনো কোনো হলে তাদের কমিটিও রয়েছে।

জুলাই অভ্যুত্থানের সময় হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়ার পর সর্বপ্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে হলে কমিটি দিয়ে রাজনীতি সূচনা করেন বামপন্থী ছাত্রসংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন। এ বছরের ২৬ মে ১৪ সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করেন সংগঠনটি। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত হলে কাউকে জোরালো প্রতিক্রিয়া দেখাতে দেখা যায়নি।

এ নিয়ে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হামজা মাহবুব বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক গ্রুপে লেখেন, উমামা ফাতেমা হলে বাম রাজনীতি ছাড়া আর কোন রাজনীতি চান না। এটা কেমন কথা? মানে হিপোক্রেসি এট ইট’স পিক! হল এবং একাডেমিক এরিয়ায় রাজনীতির বিরুদ্ধে সবাই, আর উনি হচ্ছে বাম রাজনীতি ব্যতীত বাকি সব রাজনীতির বিরুদ্ধে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *