ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Dhaka) আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে—এমনই দৃঢ় ঘোষণা দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। শুক্রবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টার দিকে তার বাসভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি এ ঘোষণা দেন।
উপাচার্য জানান, গত বছরের ১৭ জুলাই হলে হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল, তা অপরিবর্তিত থাকবে। এই নীতিমালা অনুসারে প্রতিটি হল প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। তিনি আরও বলেন, ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত কমিটি নিয়ে সংগঠনের নেতাদের সঙ্গেও তিনি আলোচনা করবেন।
তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের ঘোষণাকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তারা শুধুমাত্র আংশিক নয়—হল পলিটিক্সের সম্পূর্ণ অবসান চান। তারা ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন, যার মধ্যে রয়েছে—
– কেন কমিটি দেওয়া হলো, উপাচার্যকে তা ব্যাখ্যা করতে হবে।
– ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্রদল, শিবির, বাগছাস, বামসহ হলে বিদ্যমান গুপ্ত কমিটি বিলুপ্ত করতে হবে।
– বিশ্ববিদ্যালয়ের হল একাডেমিক এলাকায় রাজনীতির সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে ছাত্ররাজনীতির পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা প্রকাশ করতে হবে।
– ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব হল কমিটি বিলুপ্ত করতে হবে।
– হল প্রভোস্টদের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে।
– দ্রুত ডাকসু (DUCSU) নির্বাচন বাস্তবায়ন করতে হবে।
এর আগে শুক্রবার দুপুর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের হল ইউনিটের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে একাডেমিক ও আবাসিক পর্যায়ে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও নতুন কমিটি ঘোষণায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। প্রথমে রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা বিকেলে বিক্ষোভ শুরু করেন, যা রাত গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তীব্র আকার ধারণ করে।
রাত ১২টার পর সবগুলো হল থেকে শিক্ষার্থীরা টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে সমবেত হন। এরপর তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। দীর্ঘক্ষণ হট্টগোল ও স্লোগানের পর অবশেষে উপাচার্যের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ঘোষণা আসে—২০২৪ সালের ১৭ জুলাইয়ের ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী গুপ্ত ও প্রকাশ্য হল রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে।