মহেশখালীতে ওসিকে প্রকাশ্যে হুমকি, বিএনপি আহ্বায়কের সব পদ স্থগিত

কক্সবাজারের মহেশখালীতে রাজনৈতিক মঞ্চে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি করেছেন পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ও জেলা কমিটির সদস্য আকতার হোছাইন (Akhtar Hossain)। বুধবার (১৩ আগস্ট) বাবু দিঘীর পাড়ে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক (Manjurul Haque)-কে প্রকাশ্যে ‘উলঙ্গ করে এলাকা ছাড়া’ করার হুমকি দেন। স্থানীয় সূত্রের দাবি, রাজনৈতিক তদবিরে সহযোগিতা না করায় দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকেই এ মন্তব্য আসে।

সভায় আকতার হোছাইন বলেন, “ওসি সাহেব, দোকান বন্ধ করেন আপনার। ন্যাংটা করে মহেশখালী থেকে পাঠিয়ে দেয়া হবে। আগামীকাল থেকে যদি একটা কথা আপনার বিরুদ্ধে পাই, ন্যাংটা করে মহেশখালী থেকে বের করে দেব—আমি ওয়াদা করছি।”
তার এই বক্তব্যের ভিডিও দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা স্থানীয় পর্যায়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

ওসি মঞ্জুরুল হক গণমাধ্যমকে জানান, তিনি ভিডিওটি দেখেছেন এবং বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছেন। তিনি এ ধরনের হুমকিকে দায়িত্বহীন ও অনভিপ্রেত বলে মন্তব্য করেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মহেশখালীতে বিএনপির অন্তত তিনটি গ্রুপ সক্রিয়, যার একটি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন আকতার হোছাইন। দীর্ঘদিন ধরে চলা দলীয় কোন্দল ও গ্রুপিংয়ের কারণে স্থানীয় রাজনীতি উত্তপ্ত। রাজনৈতিক তদবিরে ব্যর্থ হওয়ায় তার ক্ষোভ চরমে পৌঁছায় এবং শেষ পর্যন্ত সভামঞ্চে প্রকাশ্যে পুলিশ কর্মকর্তাকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনার পরপরই বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিষয়টিকে ‘সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী (Ruhul Kabir Rizvi) স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়—ওসিকে অশোভন গালাগাল ও হুমকি দেয়ার অভিযোগে আকতার হোছাইনের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।

দলীয় বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ ধরনের মন্তব্য শুধু দলের ভাবমূর্তিই ক্ষুণ্ণ করেনি, বরং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে ঘটনাটি নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *