আমাকে দায়িত্ব দেন, সংস্কার করতে এক সপ্তাহ লাগবে: জামায়াতের নায়েবে আমির

জামায়াতে ইসলামী’র নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের রাজধানীর বিজয়নগরে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে দাবি করেছেন, সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নে তাঁর হাতে দায়িত্ব দিলে মাত্র এক সপ্তাহেই তা সম্পন্ন করা সম্ভব। বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে ‘জুলাই ঘোষণা ও জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি প্রদান এবং এর আলোকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে বলেন, “যখন আলী রিয়াজ সাহেবকে দায়িত্ব দিয়েছেন, তখন আমাকে দিন। আমি করে দেখিয়ে দেব। যদি আমরা দেখাতে পারি, প্রমাণ করতে পারি, পথ তৈরি করতে পারি, তাহলে আপনার কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। মানুষকে আর বোকা বানাবেন না।”

তিনি স্পষ্ট করে দেন, জুলাই সনদের আইনগত স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত এবং বিদেশিদের পরিকল্পনায় পরিচালিত ‘পাতানো’ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী কোনোভাবেই অংশ নেবে না। তাঁর ভাষায়, “কোনো কালো দাগ নিয়ে বিতর্কিত নির্বাচনে আমরা অংশ নেব না। প্রয়োজনে এদেশের মানুষ আবার জীবন ও রক্ত দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করবে, ইনশাআল্লাহ।”

তাহেরের অভিযোগ, বর্তমান সরকার সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা পূরণ করেনি। বরং প্রথম সংস্কার হওয়া উচিত ছিল উপদেষ্টা ও মন্ত্রীদের ব্যবহৃত চেয়ার পরিবর্তন করা। ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে তিনি বলেন, “ইতিহাস বলে, যারা ওই চেয়ারে বসে, আগে যাই থাকুক না কেন, বসার পরে আউলা-ঝাউলা হয়ে যায়। চেয়ারগুলো ভালো করে পরিষ্কার করে, নতুন করে বসালে হয়তো তারা সঠিকভাবে কাজ করত।”

জুলাই সনদের আইনি স্বীকৃতি প্রসঙ্গে তাহের বলেন, “যেই জুলাইয়ের কারণে আপনারা ক্ষমতায় আছেন, সেটিকে আইনী ভিত্তি দিতে হবে। আমাদের সংস্কার কমিশন মাসের পর মাস কাজ করেছে, কিন্তু এখন বলা হচ্ছে এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই। যদি তাই হয়, তাহলে সরকারের নিজের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।”

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “আমাদের বন্ধুরা বলছে, আমরা পার্লামেন্টে গিয়ে সংস্কার করব। আপনারা যদি সংসদে গিয়ে সংস্কার মেনে নেন, তাহলে এখন কেন মানছেন না? এর মানে হলো ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়’। আর যদি তারা ক্ষমতায় গেলে সংস্কার করবে বলে নিশ্চয়তা পেয়ে থাকে, তাহলে ভোটের আগে ক্ষমতায় যাওয়ার গ্যারান্টি পাওয়া মানে নির্বাচনের অবস্থা কী হবে, সেটা কি বোঝা যায় না? ক্ষমতার মালিক জনগণ।”

সমাবেশ শেষে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল বিজয়নগর পানির ট্যাংকি থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড়, কাকরাইল মোড়, মার্কাজ মসজিদ হয়ে মৎস্য ভবনে গিয়ে শেষ হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *