রাষ্ট্রপতির ছবিকে ঘিরে ব্যস্ত সরকার, আইনশৃঙ্খলা অবহেলায়—রুমিন ফারহানা

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা (Rumeen Farhana) বর্তমান সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তার মতে, রাষ্ট্রপতির ছবি ঝোলানো হবে কি না—এমন তুচ্ছ ইস্যুতে সরকারের ব্যস্ততা দেশের প্রকৃত সংকট থেকে মনোযোগ সরিয়ে দিচ্ছে।

বুধবার (২০ আগস্ট) জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাসুদ কামালের সঞ্চালনায় প্রচারিত “অন্য মঞ্চে” অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “যদি সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মনোযোগী হতো, মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করত, তাহলে দেশ অন্তত কিছুটা হলেও সঠিক পথে এগোতে পারত।”

ছোট ইস্যুতে সরকারের মনোযোগ

রুমিন ফারহানা বলেন, গত এক বছরে সরকার রাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ করা, বিভাজন দূর করা, প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার পরিবর্তে বারবার ছোট ও গৌণ বিষয়ে মনোযোগ দিয়েছে। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, রাষ্ট্রপতির ছবির বিষয়টি কেন হঠাৎ সরানো হলো, তা এখনো স্পষ্ট নয়। “আমরা কেউ জানি না, রাজনৈতিক দলগুলো জানে কি না তাও নিশ্চিত নয়। চুপিসারে মৌখিক নির্দেশনা কেন দেওয়া হলো? যদি ‘নো পোর্ট্রেট’ নীতি নেওয়া হয়, তাহলে প্রজ্ঞাপন জারি করা উচিত।”

তিনি আরও যোগ করেন, যে কোনো রাজনৈতিক দল যদি এ ধরনের নীতি সমর্থন করে, তবে ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে তারাও যেন একই নীতি অনুসরণ করে—এটাই জনগণের প্রত্যাশা হওয়া উচিত।

নির্বাচনের রোডম্যাপের দাবি

সাবেক এই সংসদ সদস্য মনে করেন, সরকারের মূল দায়িত্ব ছিল মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ্য নেতৃত্ব আনা এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দেওয়া। তার ভাষায়, “যদি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তুলতে কাজ করা হতো, দ্রুত নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত, তবে দেশটি হয়তো সঠিক পথে ফিরতে পারত।”

জনগণের ভীতি ও নির্বাচনের অনিশ্চয়তা

রুমিন ফারহানা বলেন, সাধারণ মানুষ রাজনীতি না করলেও তারা আতঙ্কিত এবং দ্রুত একটি রাজনৈতিক সরকার দেখতে চায়। “যে সরকারই হোক না কেন, নির্বাচিত সরকার অনির্বাচিত সরকারের চেয়ে সবসময় ভালো।” তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, দেশ স্বাধীনতার পর থেকে রাজনৈতিক নেতাদের শাসন যেমন দেখেছে, তেমনি অরাজনৈতিক উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিদের শাসনও গত এক বছরে প্রত্যক্ষ করেছে—এবং মানুষ এখন নিজেরাই তুলনা করছে।

আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। তার দাবি, ভোটারদের দীর্ঘ ১৭ বছরের ভোটাধিকার বঞ্চনার পর নির্বাচনের একটি উচ্ছ্বাস চারপাশে থাকার কথা ছিল, কিন্তু বাস্তবে তা অনুপস্থিত।

যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) বারবার ঘোষণা দিয়েছেন যে ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন হবে—প্রথমে বলেন মাসের শুরুতে, পরে আবার রমজানের আগেই শেষ করার আশ্বাস দেন—তবু সাধারণ মানুষ এখনো তা বিশ্বাস করছে না বলে মন্তব্য করেন রুমিন ফারহানা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *