সাভারে আলোচিত জুলাই ছাত্রহত্যা মামলার আসামি হিসেবে অবশেষে গ্রেপ্তার হলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (Jahangirnagar University) ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও চাকরিচ্যুত সহকারী প্রক্টর মাহমুদুর রহমান জনি, যিনি ক্যাম্পাসে ‘ললিপপ জনি’ নামে পরিচিত ছিলেন।
শনিবার ভোরে সাভারের পুলিশ টাউন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে স্থানীয় থানা পুলিশ। উপ-পরিদর্শক সামছুল আলমের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে জনিকে আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি, তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্রহত্যা মামলার (৪৪[৮]২৪) অন্যতম আসামি।
গ্রেপ্তারকৃত জনির গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার হারুয়া গ্রামে। তার পিতা মো. মফিজ উদ্দিন। সাভার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জুয়েল মিঞা জানান, জনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। তদন্তে তার সরাসরি সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ায় পুলিশ সক্রিয়ভাবে তাকে খুঁজছিল। অবশেষে তার অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে আটক করা সম্ভব হয়। ওসি আরও বলেন, তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে এবং সহযোগীদের ধরতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
অভিযোগের তালিকাও কম দীর্ঘ নয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় থেকেই তিনি ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। ক্যাম্পাসে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর হামলা, নির্যাতন চালানো এবং থানার মাধ্যমে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ছিল তার নিত্যদিনের ঘটনা।
জনিকে ঘিরে সবচেয়ে বড় বিতর্ক তৈরি হয় প্রশাসনিক পদে তার উত্থান নিয়ে। অভিযোগ আছে, তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম (Farzana Islam)-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করে তিনি প্রথমে শিক্ষক পদে নিয়োগ পান এবং পরে সহকারী প্রক্টর হন। যদিও রাজনৈতিকভাবে তিনি সাবেক ভিসি অধ্যাপক শরীফুল ইসলামের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
অবশেষে নারী সংক্রান্ত কেলেঙ্কারি ও একের পর এক অভিযোগের মুখে জনিকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়। একসময় ক্ষমতার জোরে ক্যাম্পাস কাঁপানো এই জনি এখন পুলিশের হাতে আটক হয়ে আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।