নির্বাচনী সীমানা শুনানিতে হাতাহাতি-হট্টগোল, ক্ষোভে ফেটে পড়লেন রুমিন ফারহানা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আসনভিত্তিক খসড়া সীমানা নিয়ে শুনানিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রীতিমতো বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের পক্ষে-বিপক্ষে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি আর হট্টগোলে টানটান উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ভবনজুড়ে।

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা (Barrister Rumeen Farhana) অভিযোগ করেন, তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে, এমনকি তাকেও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। শুনানি শেষে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, *“যেটা ১৫ বছরে হয়নি, সেটা আজ হলো। আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে যিনি আছেন, তিনি পিটিয়ে পিটিয়ে মানুষের স্বীকারোক্তি নিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনে আমরা প্রেজেন্ট (উপস্থাপন) করেছি। জনসংখ্যা বিবেচনায় নির্বাচন কমিশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা সঠিক সিদ্ধান্ত। আমার বিষয়গুলো আমি নিজে প্রেজেন্ট করব, তাই করেছি। আশা করেছিলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে যিনি আছেন তিনি গুন্ডাপান্ডা নিয়ে ইসিতে ঢুকবেন না। কিন্তু তারা গুণ্ডা নিয়ে ইসিতে এসেছেন। এই আসনের প্রার্থী তার গুণ্ডাপান্ডা নিয়ে ইসিতে এসে মারামারি করেছেন- এটা খুবই লজ্জাজনক। এতে কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।’

এনসিপি কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘উনি যেহেতু পরিচিত মুখ নন, সুতরাং উনি জামায়াত না এনসিপি আমার জানা নেই। তবে ওনার লোকজন প্রথমে আমাকে ধাক্কা দিয়েছে। আমার লোকজন তো বসে থাকবে না, কারণ আমি একজন নারী। আমার লোকজনকে মারধর করেছে, তখন আমার লোকজন জবাব দিয়েছে।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুনানিতে রুমিন ফারহানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের প্রস্তাবিত সীমানার পক্ষে অবস্থান নেন। বিপরীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের এক মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতা ও তার অনুসারীরা খসড়া প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। তাদের দাবি ছিল, বিজয়নগর উপজেলাকে অখণ্ড রাখতে হবে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করেই দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে।

উত্তপ্ত পরিস্থিতি শুধু নির্বাচন ভবনের ভেতরেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বাইরে গিয়েও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানেও দুই পক্ষের সমর্থকরা মুখোমুখি হলে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে একপক্ষকে গেটের সামনে থেকে সরিয়ে দেয়। পরে ইসি কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এরপর ইসি সচিব ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের শুনানির সমাপ্তি ঘোষণা করেন এবং তাদের শুনানি কক্ষ ত্যাগের অনুরোধ জানান।

রুমিন ফারহানা অভিযোগ করেন, তিনি শান্তিপূর্ণভাবে ভদ্রলোকদের সঙ্গে শুনানিতে অংশ নিলেও অপর পক্ষ অশালীন মন্তব্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, *“শেষ দিকে আমি বক্তব্য দিতে দাঁড়ালে আমাকে ধাক্কা দেওয়া হয়। আমার লোকজনকে মারধর করা হলে তারাও প্রতিউত্তর দিয়েছে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *