ভারতীয় নাগরিক বিএনপি নেতা মোস্তফার এনআইডি বাতিলে হাইকোর্টের রুল

তথ্য গোপন করে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংগ্রহের অভিযোগে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার বিরুদ্ধে হাইকোর্ট কঠোর অবস্থান নিয়েছে। আদালত কর্তৃপক্ষের নিস্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ হাবিবুল গনি ও বিচারপতি এসকে তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) এ রুলের লিখিত অনুলিপি হাতে পান রিটকারীর আইনজীবী। রিটে পক্ষে আদালতে ছিলেন অ্যাডভোকেট হাসনাত মনির চৌধুরী। আদালত স্বরাষ্ট্র সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের সচিব, কুড়িগ্রাম জেলা নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২৮ দিনের মধ্যে কেন মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার এনআইডি বাতিলের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি—তা জানাতে বলা হয়েছে।

এর আগে কুড়িগ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হোসাইন মুন্না এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। তার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ১৯ নভেম্বর কুড়িগ্রামে অভিযোগ ওঠে যে, ভারতীয় নাগরিক মোস্তাফিজুর রহমান গোপনে তথ্য লুকিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কুড়িগ্রাম জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মো. সহিদুল ইসলাম। তিনি অভিযোগটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন এবং কুড়িগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে জমা দেন।

অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা (৬৭) ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার সাহেবগঞ্জ থানার খুবিরের কুটি (চৌধুরীর হাট) গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা-মা হলেন মোজাহারুল হক ও মোছা. কবিজন নেছা। জানা গেছে, ১৯৭৬ সালে তিনি এক হিন্দু নারীকে নিয়ে ভারত থেকে পালিয়ে কুড়িগ্রামে প্রবেশ করেন। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে পুলিশ তাদের আটক করে জেল হাজতে পাঠায় এবং প্রায় ছয় মাস তারা কারাভোগ করেন।

এরপর থেকেই তিনি কুড়িগ্রামে বসবাস শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি একসময় কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং বর্তমানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্বে আছেন। বিভিন্ন পত্রিকায়ও মোস্তাফিজুর রহমানের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নেওয়ার অভিযোগে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেইসব প্রতিবেদন সংযুক্ত করেই হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *