সাড়ে ১৭ বছর পর হঠাৎ করে এক নাটকীয় আবির্ভাব ঘটালেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর (Lutfuzzaman Babar)। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা ২২ মিনিটে তিনি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (Lt. Gen. (Retd.) Jahangir Alam Chowdhury)-র সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে দৃশ্যপটে দেখা যায় এক অভাবনীয় মুহূর্ত—উপদেষ্টা উঠে দাঁড়িয়ে বাবরকে ‘স্যার স্যার’ সম্বোধন করে জড়িয়ে ধরেন।
দীর্ঘ অনুপস্থিতির পর মন্ত্রণালয়ে তার প্রবেশ ও এমন আন্তরিক অভ্যর্থনা মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার ঝড় তোলে।
সৌজন্য সাক্ষাৎ হলেও আলোচনা চলে দেশের রাজনীতির স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে। বৈঠক শেষে বাবর জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)-এর দেশে ফেরার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, “তারেক রহমানের ফেরার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি দ্রুত দেশে ফিরবেন। দোয়া করবেন।”
বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বাবর জানান, “উনারা ভালো করার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করছেন। আন্তরিকতার কোনো কমতি নেই। বিএনপিও এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে।”
বাবর আরও উদ্বেগ প্রকাশ করেন দুইটি বিষয় নিয়ে। প্রথমত, লুট হওয়া অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি—এ নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দ্বিতীয়ত, ভারতের মাটিতে আওয়ামী লীগের বৈঠক হওয়া নিয়েও উদ্বেগ জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০০১-২০০৬ মেয়াদে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন লুৎফুজ্জামান বাবর। তার রাজনৈতিক জীবন ও ভাবমূর্তি সবচেয়ে বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায়, যে মামলায় তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল।
তবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে হাইকোর্টে তিনি খালাস পান এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে সব মামলায় মুক্তি পেয়ে দীর্ঘ সাড়ে ১৭ বছরের কারাভোগ শেষে মুক্ত হন।
এই প্রেক্ষাপটে তার হঠাৎ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ এবং সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক উপদেষ্টার এমন মর্যাদাকর অভ্যর্থনা দেশজুড়ে রাজনৈতিক বার্তা বহন করছে বলে মনে করছেন অনেকেই।