আমজনতার দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ বিল্লাহ (Arif Billah) জানিয়েছেন, সরকারের উপদেষ্টারা ইচ্ছেমতো বিদেশে উড়াল দিতে পারবেন না; চিকিৎসা নিতে হবে দেশীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ভরসা রেখে। ১৬ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই দাবি জানান।
আরিফ বিল্লাহ প্রশ্ন তোলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নিজেই যদি দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর আস্থা না রাখেন, তবে জনগণের স্বাস্থ্যসুরক্ষার নিশ্চয়তা কীভাবে দেবেন তিনি? তিনি বলেন, একজন উপদেষ্টা চাইলে ব্যক্তিগত বা রাষ্ট্রীয় অর্থে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে পারেন, অথচ একজন রিকশাচালক কেন সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন? জীবনের জন্য উন্নত চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার কেন সাধারণ মানুষ হারাবে?
তিনি আরও বলেন, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে যিনি নিজেই সন্দিহান, তার নেতৃত্বে জনগণের চিকিৎসা কতটা কার্যকর হবে তা নিয়েই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে। একজন নেতার প্রথম দায়িত্ব হলো নিজের ব্যবস্থার প্রতি আস্থা তৈরি করা। অথচ বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে জনগণকে দেশে চিকিৎসা নিতে বলা—এটি সরাসরি দ্বিচারিতা, যা নৈতিক সংকট তৈরি করে।
আমজনতার দলের এই নেতা স্পষ্ট করে বলেন, একজন স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কর্তব্য হওয়া উচিত সমস্যা চিহ্নিত করে সেটি সমাধানের চেষ্টা করা, আস্থাহীনতা আড়াল করা নয়। তিনি সতর্ক করেন, ওপরের স্তরের কেউ আস্থা হারালে সাধারণ মানুষ আরও বেশি আতঙ্কিত হয় এবং সরকারি স্বাস্থ্যসেবার বাইরে বিকল্প খোঁজে। এতে সমতা ও ন্যায়ের প্রশ্নে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়।
আরিফ বিল্লাহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, কিউবায় রাষ্ট্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্যব্যবস্থায় শীর্ষ নেতা ও মন্ত্রীরাও দেশেই চিকিৎসা নেন। যুক্তরাজ্যের NHS (National Health Service) ব্যবস্থার আওতায় প্রধানমন্ত্রীসহ সবাই চিকিৎসা পান। এমনকি করোনাকালে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও লন্ডনের এক NHS হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। একইভাবে কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও জার্মানির নেতারা দেশের ভেতরেই চিকিৎসা নেন, কারণ সেসব দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা আধুনিক ও নাগরিকবান্ধব।
দেশীয় প্রেক্ষাপটে আরিফ বিল্লাহ স্মরণ করিয়ে দেন, তিনবারের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ ১৭ বছর দেশেই চিকিৎসা নিয়েছিলেন। বহু মন্ত্রী, এমপি এবং জনপ্রতিনিধিও উন্নত চিকিৎসা দেশের ভেতরেই গ্রহণ করেছেন। সম্প্রতি ছাত্রনেতা নুরুল হক নূর বিদেশে যাওয়ার প্রস্তাব সত্ত্বেও দেশে চিকিৎসা নিতে রাজি হয়েছেন। অথচ সেই সময়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সিঙ্গাপুর গমন দেশের স্বাস্থ্য খাতকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।