পাবনার এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ভারতীয় নাগরিক!

পাবনা সদর উপজেলার এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে—ভারতের নাগরিক হয়েও প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এক ব্যক্তি। শুধু তাই নয়, শ্বশুরের নামে লিজ নেয়া সরকারি সম্পত্তি জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের দখলে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত শিক্ষক সুখরঞ্জন চক্রবর্তী, যিনি বালিয়াহালট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বে আছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার দক্ষিণ ব্যারাকপুর শহরের দমদম এলাকার সূর্যসেন পল্লি ৪৬৭ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা নির্মল কুমারের ছেলে। ভারতীয় নাগরিক হিসেবে তার নাম নিবন্ধিত রয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্রে (নম্বর: ০০০০/০০৮০২/৭৬৩৯৭) এবং আধার কার্ডেও (নম্বর: ৪০৫০২২৩৪৩৩৫১)। তবে একইসঙ্গে তিনি পাবনা শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসেবেও পরিচিত।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের চাকরিবিধি উপেক্ষা করেই সুখরঞ্জন চক্রবর্তী শিক্ষকতা চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ তিনি ভারতের নাগরিক, সেখানে জমি-ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন এবং তার স্ত্রী ও বড় ছেলে ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। পাবনায় তিনি ছোট ছেলেকে সঙ্গে রেখে থাকেন, যিনি বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় সরকারি ভাতা পান। প্রায়ই এক মাস বা পনেরো দিনের ছুটি নিয়ে ভারতে যাতায়াত করেন তারা।

এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, শ্বশুর দীপক কুমার রায়ের নামে লিজ নেয়া সরকারি সম্পত্তি জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের নামে নেয়ার চেষ্টাও করছেন তিনি। এ বিষয়ে সুখরঞ্জনের শ্যালক সুমন কুমার রায় অভিযোগ করে বলেন, “আমার বাবা শহরের মুরগিপট্টিতে সরকারি জমি লিজ নিয়ে বসবাস করতেন। তার মৃত্যুর পর মা লিজ নবায়ন করেন। মা মারা যাওয়ার পর কাউকে না জানিয়ে সুখরঞ্জন শুধু আমার বোনকে উত্তরসূরি বানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন। এমনকি পৌরসভাতেও আমার একমাত্র বোনকে উত্তরসূরি হিসেবে দেখিয়ে আবেদন দিয়েছেন। এখন আমার বাড়িতে বসবাস করেও আমাকে উচ্ছেদ করতে চাইছেন।”

এ বিষয়ে পাবনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল কবীর নিশ্চিত করে বলেন, “আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ এসেছে এবং প্রমাণস্বরূপ কিছু কাগজপত্রও পেয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। আশা করছি শিগগিরই রিপোর্ট হাতে পাবো এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।”

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সুখরঞ্জন চক্রবর্তী দাবি করেন, “এসব অভিযোগ মিথ্যা, এসব কাগজপত্র বানানো যায়। আমার স্ত্রী-সন্তানরা তার ভাইয়ের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে ভারতে চলে গেছে। তাদের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। আমি তাদের ফেরানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু আসেনি। আমার বিরুদ্ধে তদন্ত হলে সব ডকুমেন্টস দাখিল করবো।”

বার্তা বাজার/এস এইচ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *