“সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রস্তুতি নেয়ার তার অনেক কিছু এগিয়ে নিয়েছি”- নির্বাচনী সংলাপের শুরুতে সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন (A M M Nasir Uddin) জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সুষ্ঠুতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নয়টি আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রস্তুতি দরকার, তার অনেকটাই আমরা আগেই এগিয়ে নিয়েছি।”

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সংলাপে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ (Akhtar Ahmed) এবং কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের পক্ষে ১২ জন অংশ নেন।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন—সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাহমুদ হাসানউজ্জামান, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মো. মাহফুজুর রহমান, অধ্যাপক আব্দুল ওয়াজেদ, বিজিএমইএ পরিচালক রশিদ আহমেদ হোসাইনি, কবি মোহন রায়হান, পুলিশ রিফর্ম কমিশনের মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি জারিফ রহমান, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস ও টিআইবির পরিচালক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান।

সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, “আসন্ন ত্রয়োদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা অনেক কাজ শেষ করেছি। বিশাল ভোটার তালিকা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সম্পন্ন করেছি, নারী ভোটারের ব্যবধান কমিয়েছি। নয়টি আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে। সংস্কার কমিশনের আলোচনায় অনেক বিষয় উঠে এসেছে। আপনারা আজকের আলোচনায় যেসব গ্যাপ পূরণ করবেন, তা আমাদের কাজে সহায়তা করবে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, আইটি সাপোর্ট ও পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সফলভাবে শেষ হয়েছে। এবার ১০ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা নির্বাচনে কাজ করবেন, তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে। এমনকি হাজতে থাকা ভোটারদেরও ভোট দেওয়ার সুযোগ তৈরি করা হবে।

“আমরা একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে বদ্ধপরিকর। আপনাদের মতামত আমাদের পথচলায় দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে,” বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক জানান, দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত মোট ৩৩ জন শিক্ষাবিদের সঙ্গে আরেকটি সংলাপ করবে কমিশন।

ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি দুর্গাপূজা শেষে রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, পর্যবেক্ষক, নারীনেত্রী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপে বসা হবে।

বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫২। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু হয়। এরপর থেকে ৫৬টি দল নিবন্ধন পেলেও শর্ত পূরণে ব্যর্থতা ও আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়। এগুলো হলো—বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি এবং জাগপা। সম্প্রতি আদালতের আদেশে জামায়াতে ইসলামী ও জাগপা নিবন্ধন ফিরে পেলেও নির্বাচন কমিশন কেবল জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি আদালতের নির্দেশে নতুন দল হিসেবে নিবন্ধন পেয়েছে বাংলাদেশ লেবার পার্টি।

কমিশনের সময়সূচি অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর ভোটের তফসিল ঘোষণা হতে পারে চলতি বছরের ডিসেম্বরের প্রথম দিকে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *