“প্রত্যেক উপদেষ্টা নিজের আখের গোছাচ্ছেন”—সামান্তা শারমিন

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটা ও নিপীড়নের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party – NCP) নেতারা। দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন (Samanta Sharmin) অভিযোগ করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রত্যেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গোছানোর কাজে ব্যস্ত। সরকার এখন শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

রোববার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে একাত্মতা জানিয়ে সামান্তা বলেন, “যারা অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন—ছাত্র-জনতা, শিক্ষক-চিকিৎসক—তাদের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে এটা সম্ভব হয়েছে। অথচ এখন শুনছি ৩০০ কোটি টাকা দিয়ে মন্ত্রণালয়গুলোর জন্য গাড়ি কেনা হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষকদের ন্যায্য বেতন বাড়াতে গেলে বলা হয় সরকারের হাতে টাকা নেই!”

শিক্ষা কমিশন গঠন না করায় সরকারকে দায়ী করে সামান্তা বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তত একটি শিক্ষা কমিশন গঠিত হবে। শেখ হাসিনার আমলে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেওয়া শিক্ষা ব্যবস্থাকে রক্ষা করার জন্য এমন একটি উদ্যোগ জরুরি ছিল। কিন্তু সরকার শিক্ষকদের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে অবজ্ঞা করে একটি নতুন নির্বাচনের দিকে দেশকে ঠেলে দিয়েছে।”

তিনি বলেন, “শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের সবচেয়ে বড় দিকটি হলো শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন। তাদের প্রশিক্ষণ, বেতন, সুযোগ-সুবিধা—সবক্ষেত্রেই চরম অবহেলা চলছে। শিক্ষকদের মাত্র ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা দিতে হলেও এখন সরকারকে বলতে হয়! এটা জাতির জন্য লজ্জাজনক।”

এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ (Hasnat Abdullah) সরাসরি পুলিশের আচরণকে ‘অসভ্য’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “রাস্তায় ফেলে শিক্ষক পেটানো কোনো সভ্য রাষ্ট্রের পরিচয় হতে পারে না। যারা হামলা চালিয়েছেন, তাদের অনতিবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে এবং যেসব শিক্ষককে আটক করা হয়েছে, তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের দেশের শিক্ষকরা তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণির নাগরিকের মতো জীবনযাপন করেন। অথচ তাদের কাছ থেকে রাষ্ট্র প্রথম শ্রেণির নাগরিক চাইছে। তাদের বেতন মাস শেষে হয় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। এভাবে কোনো জাতি উন্নত হতে পারে না।”

শিক্ষকদের সঙ্গে সংহতি জানানো এই কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব ও শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশিরসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *