সেনাবাহিনীকে নিয়ে এমন অশালীন আক্রমণ অতীতে কখনও দেখা যায়নি: রুমিন ফারহানা

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা (Barrister Rumin Farhana) বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সেনাবাহিনীকে নিয়ে এমন অশালীন ও অশোভন ভাষায় আক্রমণ এর আগে কখনো হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে লক্ষ্য করে যেভাবে আক্রমণাত্মক ভাষায় মন্তব্য করা হয়েছে, তা বাংলাদেশের জন্মলগ্নের পর কোনো সময়েই দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্প্রতি এক বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। সঞ্চালকের প্রশ্ন ছিল— “ইদানীং দেখা যায়, যেখানে সেনাবাহিনীর নাম আসে, সেখানে প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেনাবাহিনী এবং সেনাপ্রধানকে দায়ী করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এটা কেন, কারা করে?”— এর জবাবে রুমিন ফারহানা বলেন, “যারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, যারা মুখে অন্যদের ভারতের এজেন্ট বলে অভিযুক্ত করে, অথচ নিজেরাই বিদেশি স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে, তারাই দেশের বাইরে থেকে সেনাপ্রধানকে লক্ষ্য করে নানা অভিযোগ তোলে।”

রুমিন ফারহানা বলেন, “আমি বিনীতভাবে মনে করিয়ে দিতে চাই, ২০২৪ সালের ১ আগস্ট থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আমি নিজে মাঠে ছিলাম। সেই সময় চারপাশে স্লোগান উঠছিল— ‘এই মুহূর্তে দরকার সেনাবাহিনী সরকার।’ যদি তখন সেনাপ্রধান ক্ষমতা গ্রহণ করতেন, আমি নিশ্চিত, মানুষ খুশি ছাড়া কেউ বেজার হতো না। সবাই আনন্দিত হতো।”

তিনি আরও যোগ করেন, “কিন্তু সেনাপ্রধান সেটি করেননি। তিনি তার দায়িত্বে অবিচল থেকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব দেখিয়েছেন। প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন যে, তিনি আর কখনও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে রাজনীতির সঙ্গে জড়াতে চান না— এবং তিনি কথামতো কাজও করেছেন।”

রুমিন ফারহানা বলেন, “ঠিক এই কারণেই গত ১৪ মাস ধরে তার বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে, অপপ্রচার চালানো হয়েছে। যারা সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চেয়েছিল, তারা ব্যর্থ হয়েছে। সেনাপ্রধান বারবার তার প্রজ্ঞা ও ধৈর্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।”

তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হলে সেনাপ্রধানের কোর্ট মার্শাল হতো, এমনকি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারত। কারণ বিদ্যমান সরকারের নির্দেশ অমান্য করে সাধারণ জনগণের কাতারে দাঁড়ানোর অভিযোগ উঠত তার বিরুদ্ধে। তাই যদি কাউকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়, যার ওপর আওয়ামী লীগের খড়গ নামত, তিনি হতেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান (General Waker-Uz-Zaman)।”

রুমিন ফারহানা আরও বলেন, “বাংলাদেশের সৌভাগ্য যে, ওয়াকার-উজ-জামানের মতো একজন সেনাপ্রধান পেয়েছে। মাত্র ৩৬ দিনের দায়িত্বকালে তার ভূমিকা ছিল অসাধারণ। তিনি চাইলে সহজেই বাংলাদেশকে সামরিক শাসনের দিকে নিতে পারতেন, কিন্তু নেননি। বরং একজন প্রকৃত সেনা কর্মকর্তা হয়েও বারবার নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছেন— যা সেনাবাহিনীর প্রথাগত আচরণের বাইরে এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ।”

তার ভাষায়, “জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বাংলাদেশের রাজনীতিতে পেশাদারিত্ব ও নৈতিক দৃঢ়তার এক নতুন অধ্যায় রচনা করেছেন।”

বার্তা বাজার/এস এইচ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *