খোদ পোষ্ট অফিস থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে জাল টাকা

শেরপুর জেলা পোস্ট অফিসে জাল টাকা সরবরাহের অভিযোগে দুই কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (১৯ অক্টোবর) তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এর মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, আরেকজনের বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া দুই কর্মকর্তা হলেন শেরপুর পোস্ট অফিসের ক্যাশিয়ার মানিক মিয়া (Manik Mia) ও ট্রেজারার হাফিজুর রহমান (Hafizur Rahman)। মানিক মিয়াকে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) এবং হাফিজুর রহমানকে শনিবার (১৮ অক্টোবর) গ্রেপ্তার করা হয়।

ব্যাংকে জমা দিতে গিয়ে ধরা পড়ে জাল টাকা

ঘটনার সূত্রপাত ১৩ অক্টোবর। শেরপুর সদর উপজেলার গণইমমিনাকান্দা গ্রামের ৬০ বছর বয়সী নিরক্ষর নারী শাহিনা বেগম ২ লাখ ৬৯ হাজার টাকা জমা দিতে যান উত্তরা ব্যাংকে। ব্যাংকের ক্যাশিয়ার টাকা গুনতে গিয়ে দেখতে পান, ৫৩টি এক হাজার টাকার নোট জাল।
এর কয়েকদিন আগেই, ৯ অক্টোবর দুপুরে শেরপুর সোনালী ব্যাংকে নুহূ নামের এক ব্যক্তি সরকারি চালানের ২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা জমা দিতে গেলে একইভাবে ২৫টি এক হাজার টাকার নোট জাল হিসেবে ধরা পড়ে।

দুই ভুক্তভোগীই জানিয়েছিলেন, তারা টাকাগুলো তুলেছিলেন শেরপুর জেলা পোস্ট অফিস থেকে। এই অভিযোগের পর ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে নেয় প্রশাসন, পোস্ট অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ। জানা গেছে, এখন অন্তত তিনটি সরকারি সংস্থা এ বিষয়ে তদন্ত চালাচ্ছে।

আদালতে জবানবন্দি ও রিমান্ড আবেদন

শেরপুর কোর্ট পরিদর্শক মো. জিয়াউর রহমান জানান, আসামি মানিক মিয়া ও হাফিজুর রহমানকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। হাফিজুর রহমান ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন, আর মানিক মিয়ার বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। আগামী ২৩ অক্টোবর এই রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

আরও জড়িতদের খোঁজে পুলিশ

শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জোবাইদুল আলম (Md. Zobaidul Alam) বলেন, “ঘটনাটি জানার পরই আমরা তদন্ত শুরু করেছি। ইতোমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তবে আরও কয়েকজন সন্দেহের তালিকায় আছেন। ঘটনাটির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *