দীর্ঘ ১৬ বছর পর নির্বাচনের সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষমতা ফিরে পেল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী (Bangladesh Army)। ২০০১ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে এই ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে সেই ক্ষমতা রহিত করে দেয়। এবার অন্তর্বর্তী সরকার আবারও সেই কর্তৃত্ব ফিরিয়ে দিয়েছে সেনাবাহিনীর হাতে।
আরপিও-র সংশোধিত বিধান অনুযায়ী, নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা এখন থেকে পুলিশ কর্মকর্তাদের মতোই নির্বাচনী অপরাধের ক্ষেত্রে কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা পাবেন। ২০০৮ সালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ (Awami League) সরকার এই বিধানটি বাতিল করে দিয়েছিল, কারণ তাদের মতে সেনাবাহিনীর এই ক্ষমতা “ভোট লুটের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।” তখন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞা থেকে প্রতিরক্ষা বিভাগ—অর্থাৎ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী—কে বাদ দেওয়া হয়। ফলে একজন আনসার সদস্যের যে আইনি ক্ষমতা ছিল, একজন সেনা সদস্যেরও তা আর থাকেনি। এমনকি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ক্ষেত্রেও সেনাবাহিনীকে রাখা হয়েছিল সম্পূর্ণ ক্ষমতাহীন অবস্থায়।
২০০১ সালের নির্বাচনের আগে সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী সেনাবাহিনীকে প্রথমবারের মতো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা তখন অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর হয়। কিন্তু ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পর সরকার সেই অধ্যাদেশ বাতিল করে সেনাবাহিনীকে আইন প্রয়োগের ভূমিকা থেকে সরিয়ে নেয়।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমান এল মাসুদ (Election Commissioner Abdur Rahman El Masud) বলেন, “আমাদের সশস্ত্র বাহিনী দেশবাসীর আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলো মনে করে, নির্বাচনে সেনাবাহিনী যদি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে, তা সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ আরও প্রশস্ত করবে। তাই আমরা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ সংশোধন করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এই সংশোধনের ফলে নির্বাচনী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীকে আর কারও নির্দেশের অপেক্ষায় থাকতে হবে না।”
বার্তা বাজার/এস এইচ


