নয় মাসে ৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ করেও আলী রীয়াজ শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব এড়িয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক ছাত্রনেতা ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক মোশাররফ আহমেদ ঠাকুর (Mosharraf Ahmed Thakur)। সম্প্রতি এক টেলিভিশন টকশোতে তিনি এই মন্তব্য করে বলেন, “ড. ইউনূসের পক্ষে এতদিন মাঠে ছিলেন আলী রীয়াজ। এখন বলছেন রাজনৈতিক দলগুলো বসে সিদ্ধান্ত নিক—তাহলে শুরুতেই তা বলতেন না কেন?”
আলোচনায় তিনি তীব্র ভাষায় বলেন, “৮৩ কোটি টাকা খরচ হলো, আর এখন বলা হচ্ছে—রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নিক। যদি দলগুলোর সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করতো, তাহলে প্রথম থেকেই সে কথাই স্পষ্ট করে বলা যেত। অন্তত একটা রূপরেখা, একটা মতামত আমাদের দেওয়া যেত—পাঁচ-দশটা বিষয়ের ওপর দিকনির্দেশনা। তখন রাজনৈতিক দলগুলো বসে সিদ্ধান্ত নিতো, হোক তা পনেরো দিনে বা এক মাসে।”
আসিফ নজরুল (Asif Nazrul)-এর মন্তব্যকে উদ্ধৃত করে মোশাররফ বলেন, “মাঠও নাই, পুরোহিতও নাই—আসিফ নজরুল ঠিকই বলেছেন। আগে মাঠে ছিলেন আলী রীয়াজ, তিনিই ছিলেন ইউনূসের পক্ষে পুরোহিতের ভূমিকায়। আর এখন পুরো ব্যাপারটি ফেলে দিয়ে তিনি সরেই গেলেন।”
আলী রীয়াজের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে গিয়ে মোশাররফ বলেন, “নয় মাস পর আপনি বলছেন রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নিক। এর আগে চার মাস পার করেছেন বুকিশ, হজপজ কাজ করে। এই সময়টা কি আসলেই কাজের ছিল? গণঅভ্যুত্থান পরিস্থিতিতে তো মানুষের ধৈর্য কম থাকে, সহিষ্ণুতা কম থাকে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, সিকিউরিটি, ডিফেন্স—সবই তখন নাজুক অবস্থায় থাকে। সেই প্রেক্ষাপটে আলী রীয়াজের এই নির্লিপ্ততা খুবই হতাশাজনক।”
নিজেকে ড. ইউনূস (Dr. Yunus)-এর বিরোধী হিসেবে অস্বীকার করেও মোশাররফ বলেন, “আমি ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে না। বরং উনার প্রতি আমার প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু উনি যা দিয়েছেন, তা হলো একটা মূষিক। আর এই ‘মূষিক প্রসব’-এর কারণেই আমি ওনার সমালোচনা করছি।”
মোশাররফ আহমেদের বক্তব্যে সামগ্রিকভাবে স্পষ্ট, তিনি আলী রীয়াজ ও ড. ইউনূসের নেতৃত্বে চলমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি ক্ষুব্ধ ও হতাশ। তার মতে, এমন এক সংকটময় সময়েও যখন দেশের প্রতিটি সেক্টর চাপের মুখে, তখন দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এই রকম ‘পালিয়ে যাওয়া’ ক্ষমার অযোগ্য।


