“দায় এড়াতে চান প্রধান উপদেষ্টা” — জুলাই সনদ নিয়ে এনসিপির অভিযোগ

জাতীয় নাগরিক কমিটি (NCP)-র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন অভিযোগ করেছেন, ‘জুলাই সনদ (July Charter) আদেশ ঘোষণার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঘাড়ে দীর্ঘমেয়াদি সংকট চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “সরকার ও প্রধান উপদেষ্টা (Chief Adviser) দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।”

এই বক্তব্যের পেছনে রয়েছে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ-২০২৫’ গেজেট আকারে প্রকাশ। বৃহস্পতিবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ এই আদেশের গেজেট প্রকাশ করে। তার আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এতে স্বাক্ষর করেন এবং উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনও দেওয়া হয়।

সামান্তা শারমিনের মতে, “রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত জনগণের স্বার্থকে সর্বাগ্রে রেখে কাজ করা। কিন্তু সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ এবং প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য ইঙ্গিত দেয়, তাঁরা এখন দায় এড়াতে চাইছেন।”

এই আদেশ অনুযায়ী, সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাবগুলো এখন সরাসরি জনগণের রায়ের কাছে তোলা হবে একটি গণভোটের মাধ্যমে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন (National Consensus Commission)-এর মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর যে ৩০টি সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত হয়েছে, সেগুলোই ব্যালটে যাবে।

এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ১৭ অক্টোবর বিএনপি (BNP), জামায়াতসহ ২৪টি রাজনৈতিক দল জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদে সই করে। এরপর ২৮ অক্টোবর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য দুটি বিকল্প সুপারিশ জমা দেয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই আদেশ একদিকে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের মতামত নেওয়ার পথ খুলে দিলেও, অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাঁধে চাপিয়ে দিল একটি দীর্ঘমেয়াদি সাংবিধানিক রূপান্তরের দায়। সামান্তা শারমিনের বক্তব্য সেই চাপের প্রতিক্রিয়া হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *