তিন-চার দিনের মধ্যেই গণভোট আইন পাসের আশা, হাসিনাকে ফেরাতে আইসিসিতে যাওয়ার ইঙ্গিত আইন উপদেষ্টার

আগামী তিন থেকে চার কার্যদিবসের মধ্যেই দেশের বহুল আলোচিত গণভোট আইন পাস হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল (Asif Nazrul)। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।

আইন উপদেষ্টা বলেন, “গণভোট আইন আমরা খুব দ্রুত করতে যাচ্ছি। এই উইকে করে ফেলবে। ধরেন আগামী তিন বা চার কার্যদিবসের মধ্যে হয়ে যাবে।”

তিনি জানান, আজ অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা গণভোট আইনের খসড়া অনুমোদন করেছেন। উল্লেখ্য, গণভোট আইনের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কাঠামো নির্ধারণ ও জনগণের প্রত্যক্ষ মতামতের ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথ খুলবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত।

বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয়

ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা আরও জানান, উপদেষ্টা পরিষদ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় গঠনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে।

তিনি বলেন, “এই সচিবালয় নিম্ন আদালতের বিচারকদের সবকিছুর দায়িত্বে থাকবে। ফলে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থেকে তারা পুরোপুরি মুক্ত থাকবে। সচিবালয় গঠনের পর থেকেই এই পরিবর্তন কার্যকর হবে।”

বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব অপসারণের দাবি দীর্ঘদিনের। এই সিদ্ধান্তকে দেশের বিচারব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালকে ফেরানোর প্রচেষ্টা

জুলাইয়ের সামরিক অভ্যুত্থানে বর্বর হত্যাকাণ্ডে দণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা ও কামালকে ফেরত আনতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (ICC) যাওয়ার বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। ভারতকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে—এদের ফিরিয়ে দিতে হবে। ভারতের উচিত শেখ হাসিনাকে ফেরত দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান জানানো।”

এই বক্তব্যে ফের আলোচনায় এসেছে শেখ হাসিনা ও কামালের আশ্রয়স্থল এবং তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার বৈশ্বিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের আন্তর্জাতিক আইনি পদক্ষেপ দেশি-বিদেশি মহলে নতুন প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিতে পারে।

গণভোট আইন ও বিচার বিভাগে পরিবর্তনের তাৎপর্য

গণভোট আইনের দ্রুত পাস ও বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিতের প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিগত অবস্থানকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরছে। পাশাপাশি, অতীতের অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিতের পদক্ষেপও নতুন বাংলাদেশ গঠনের দিকে এক শক্তিশালী পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *