বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনী জোট প্রসঙ্গে গণসংহতি আন্দোলন (Ganosamhati Andolon)-এর প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি (Jonaed Saki) জানিয়েছেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছয়টি দল নিয়ে গঠিত ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’–ই তাদের নির্বাচনী জোট।
তিনি বলেন, “দলগতভাবে আমরা আমাদের প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত করেছি। কিন্তু আমরা যে জোটগতভাবে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করেছি, সেই ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’-এর মধ্য দিয়েই আমরা আসন সমঝোতা করবো। সে বিষয়ে আমাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত রয়েছে।”
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) পটুয়াখালীর বাউফলে সংগঠনের প্রবীণ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এস. এম. আমজাদ হোসেনের জানাজা ও দাফনে অংশ নিতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি আরও জানান, ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ বিএনপিসহ আরও ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুগপৎ ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিল। আন্দোলনের সময় রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা, রাজনৈতিক কাঠামো পুনর্গঠন ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নিয়ে যে অঙ্গীকার ছিল, তা এখনো বহাল আছে। তিনি বলেন, “৩১ দফাকে সামনে রেখে লড়াই অব্যাহত রয়েছে। এই পরিবর্তন বাস্তবায়ন করতে হলে আগামী জাতীয় সংসদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা নির্বাচনকে ঘিরে যুগপৎ আন্দোলনের অংশীদারদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় আছি। আশা করছি, খুব দ্রুত আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবো।”
গণসংহতির পক্ষ থেকে তিনি দাবি করেন, সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাবনার শুরুটাও তারাই করেছেন। এ বিষয়ে বলেন, “আমরা চাই, আগামী সংসদ তার প্রথম ছয় মাস সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করুক। সংবিধানের যে কাঠামো এখন বিদ্যমান, তা জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে না।”
বর্তমান শাসনব্যবস্থার সমালোচনা করে জোনায়েদ সাকি বলেন, “আমরা ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটিয়েছি, কিন্তু ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পতন এখনো ঘটেনি। সেই ব্যবস্থা না ভাঙলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। জনগণকেই আমরা ক্ষমতার কেন্দ্রে দেখতে চাই, যেখানে জনপ্রতিনিধিরা জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে।”
নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “গত পরশুদিন নির্বাচন কমিশন আমাদের ডেকেছিল। সেখানে আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি—স্টেকহোল্ডার ও অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করে একতরফাভাবে আরপিও (RPO) পরিবর্তন করলে তা কার্যকর হবে না। এখন তারা সবাইকে নিয়ে বসছে, যা ইতিবাচক। আলোচনার মাধ্যমে যে প্রস্তাব আসবে, সেটার ভিত্তিতে আরপিও পরিবর্তন করলেই তা বাস্তব ও গ্রহণযোগ্য হবে।”
এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হলো যে, নির্বাচন সামনে রেখে গণতন্ত্র মঞ্চ ও বিএনপির মধ্যে আলাপ-আলোচনা এক প্রক্রিয়ায় রয়েছে এবং শিগগিরই একটি রাজনৈতিক সমঝোতা হতে যাচ্ছে।


