শিক্ষার্থীর মাকে কুপ্রস্তাব ও আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল—রানাপাশা ইউনিয়ন জামায়াত সভাপতি নুরুল্লাহ বহিষ্কার

এক অচেনা নারীর সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও কল ভাইরাল হওয়ার পর ঝালকাঠির জামায়াতে-ইসলামী (Jamaat-e-Islami) নেতৃত্বে থাকা হাফেজ মো. নুরুল্লাহ—এক শিক্ষার্থীর মাকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে অবশেষে বহিষ্কৃত হয়েছেন। ঝালকাঠির নলছিটি-উপজেলা (Nalchity Upazila) এলাকার রানাপাশা-ইউনিয়ন (Ranapasha Union) জামায়াতের সভাপতি ছিলেন তিনি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক মাস আগে এক অচেনা নারীর সঙ্গে ভিডিও কলে আপত্তিকর কথোপকথনের একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নুরুল্লাহকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে সদর উপজেলার কৃষ্ণকাঠি এলাকার একটি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় শিক্ষকতার সময় এক শিক্ষার্থীর মায়ের (প্রবাসীর স্ত্রী) মোবাইলে নিয়মিত কুপ্রস্তাব পাঠানোর অভিযোগও ওঠে।

এ বিষয়ে জানাজানি হলে ওই শিক্ষার্থীর স্বজনরা নুরুল্লাহকে ধরে মারধর করেন। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হলেও মারধরের ভিডিও ও জবানবন্দির কয়েকটি অংশ আবারও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে।

স্থানীয়রা আরও জানান, নুরুল্লাহ কখনো নিজেকে ইসলামিক বক্তা, কখনো সাংবাদিক, আবার কখনো বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিতেন। তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘মো. ফিরুজ আলম নুরুল্লাহ’ নামে আরেকটি পরিচয় ব্যবহারের বিষয়টিও সামনে এলে একাধিক ভুয়া পরিচয়ের অভিযোগ আরও জোরালো হয়।

ক্রমাগত অভিযোগের পর জেলা ও উপজেলা জামায়াত যৌথভাবে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির অনুসন্ধানে নারী হয়রানি, নৈতিক বিচ্যুতি, ভুয়া পরিচয় ব্যবহার এবং দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়গুলো প্রমাণিত হলে প্রথমে তার পদ স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে দলীয় সিদ্ধান্তে তাকে বহিষ্কার করা হয়।

ঝালকাঠি জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. ফরিদুল হক বলেন, “জামায়াতে ইসলামী নৈতিকতা ও শৃঙ্খলার বিষয়ে কঠোর। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় তার পদ স্থগিত করা হয়েছিল।” পরে বিষয়টি আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় উপজেলা জামায়াতের দায়িত্বশীলরা জরুরি বৈঠক ডেকে নুরুল্লাহকে সংগঠন থেকে সরিয়ে দেন।

ঘটনাটি নিশ্চিত করে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বলেন, “অনৈতিক আচরণের অভিযোগ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও পর্যালোচনা করে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।” তবে তার দাবি—মাদরাসাকে ঘিরে কিছু ব্যক্তিগত বিরোধে জড়িত কয়েকজন ব্যক্তি ষড়যন্ত্রপ্রসূতভাবে বিষয়গুলো ছড়িয়ে দিয়েছে এবং নুরুল্লাহকে মারধর করেছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও হাফেজ নুরুল্লাহ সাড়া দেননি।

বার্তা বাজার/এমএমএইচ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *