রাজশাহীর তানোরে ভূগর্ভস্থ পানি তোলার জন্য খোঁড়া একটি গভীর গর্তই কেড়ে নিল দুই বছরের ফুটফুটে শিশু সাজিদের প্রাণ। প্রায় ৩২ ঘণ্টার উদ্ধার অভিযান শেষে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা যখন তাকে উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান, সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান—সাজিদ আর বেঁচে নেই। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিথর দেহটি ফিরিয়ে আনা হয় তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে।
সাজিদের বাবা রাকিব উদ্দীন এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন। শিশুর মৃত্যুতে নিজের অসহায়তা আর শোকে তিনি বলেন,
“আমি বিচার চাই। প্রশাসনিকভাবে যে বিচার করবে, আমি তাতেই সন্তুষ্ট। সঠিক যেটা, সেটা আমাকে দেবে। আমি ফুটফুটে একটা সন্তান হারিয়েছি। আমার একটা কলিজা হারিয়ে ফেলেছি। এখন আমার কিছু করার নাই, শুধু দোয়া করা ছাড়া।”
সংবরণ করতে না পারা কষ্টের মধ্যেও তিনি গর্ত খোলা রেখে যাওয়ার দায় এড়াতে দেননি কারও:
“যেহেতু আল্লাহই দিয়েছেন, আল্লাহই নিয়ে গেছেন। কিন্তু অবহেলা হয়েছে—গর্তটা বন্ধ করা হয়নি, এটিই মূল অবহেলা। যারা হাউজিং (গর্ত) করেছে, এটা তাদেরই কাজ। তারা না করলে সমস্যা হবে কেন? পাইপের মুখে অন্য কিছু দিত, একটা বস্তু দিত, বাঁধা দিত বা অন্তত একটি নিশানা দিত—কিছুই দেয়নি। এ ঘটনাটির জন্য আমি বিচার চাই, আর প্রশাসনিকভাবে যে বিচার করবে, তাতেই আমি সন্তুষ্ট।”
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় সাজিদের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে তাদের বাড়ির পাশের মাঠে। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হবে।


