পরিবার থেকে নির্বাচনের আগাম সতর্কবার্তা, তবু ভয় না পাওয়ার কথা জানালেন প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafikul Alam) জানিয়েছেন, তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে পরিবারে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। স্ত্রী, সন্তান এবং ভাইবোন—সবার মধ্যেই এক ধরনের শঙ্কা কাজ করছে। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে তাঁকে আরও সতর্ক থাকতে বলেছেন তারা। তবে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি বলেছেন, পরিবার ভীত হলেও তিনি নিজে ভয় পান না।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) নিজের ফেসবুক (Facebook) অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে এসব কথা লেখেন তিনি। পোস্টে শফিকুল আলম উল্লেখ করেন, আজ তাঁর এই দায়িত্ব নেওয়ার ১৬ মাস পূর্ণ হলো। লেখার মতো মানসিক অবস্থায় তিনি ছিলেন না বলেও স্বীকার করেন। কিন্তু আগের দিনের নৃশংস গু’\লি’\বর্ষণের পর থেকে ওসমান হাদি তাঁর চিন্তা ও দোয়ায় জায়গা করে নিয়েছেন বলে জানান।

পোস্টে তিনি লেখেন, দেশের নানা প্রান্তে তাঁকে যেতে হয় এবং যেখানে যান, সেখানেই তিনি লাখ লাখ ‘হাদি’কে দেখতে পান। তাঁর ভাষায়, “হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামাল— বাংলার কসাইরা— আর কতজনকে মারতে পারবে?” এই প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির হাল এখন এক নতুন প্রজন্মের হাতে। এই প্রজন্ম ইতোমধ্যে এক স্বৈরাচারকে উৎখাত করেছে, যদিও তাদের সংগ্রাম এখনও শেষ হয়নি।

শফিকুল আলমের মতে, যতক্ষণ পর্যন্ত এই প্রজন্ম নিজেদের অবস্থান থেকে সরে যেতে অস্বীকার করবে, ততক্ষণ ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। হতাশ হওয়ারও প্রয়োজন দেখেন না তিনি। আনাসের উদাহরণ টেনে তিনি স্মরণ করেন, কীভাবে শ’\হীদ হওয়ার আগে মায়ের কাছে হৃদয়বিদারক একটি চিঠি লিখেছিলেন তিনি। সেই তরুণদের মতোই আজকের যুবসমাজও নিজেদের পরিবারের কাছে অঙ্গীকার করেছে— দেশটা ঠিক না করা পর্যন্ত তারা থামবে না।

প্রেস সচিব আরও লেখেন, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে আগামী দশকগুলোতে বাংলাদেশ পথ হারাবে না। সামনে ধাক্কা আসবে, বাধা থাকবে। শক্তিশালী বিদেশি ও দেশীয় শক্তি সাময়িকভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে অচল করার চেষ্টা করবে। তবু এই প্রজন্ম ভয় পায় না, এবং শেষ পর্যন্ত তারা গন্তব্যে পৌঁছাবেই— এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

পোস্টের শেষভাগে তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই ও আগস্ট মাসে দেশ হারিয়েছে আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, আনাস, আহনাফ, ফাইয়াজ, দীপ্ত, নাইমা ও রিয়া গোপকে। পাশাপাশি বিদেশি চাপিয়ে দেওয়া এক স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রামে হারাতে হয়েছে আবরার ফাইয়াজকেও। এসব ক্ষতির পরও চারদিকে ছড়িয়ে আছে লাখ লাখ হাদি ও নাবিলা। তারা ভয় পায় না— এবং তিনি নিজেও ভয় পান না বলে আবারও স্পষ্ট করে জানান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *