বিজয় দিবসে ফেলানীর স্মরণে রাজধানীতে ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’ নামফলক উন্মোচন

রাজধানীর গুলশান-২ গোলচত্বর থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কের নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’। সীমান্তে নি’\হত কিশোরী ফেলানী খাতুনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সড়কটির নামফলক উন্মোচন করা হবে।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (Dhaka North City Corporation–DNCC)। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিজয় দিবসের দিনে ডিএনসিসির আওতাধীন গুলশান-২ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত নবনামকৃত ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’-এর নামফলক উন্মোচন উপলক্ষে একটি আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ (Mohammad Ejaz)। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান (Adilur Rahman Khan)। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহল ও নাগরিক প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এই নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে ফেলানীর স্মৃতিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান জানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের সদ্য সাবেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (Asif Mahmud Sajib Bhuiya) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়ে প্রথমবারের মতো সড়কটির নতুন নামের বিষয়টি প্রকাশ করেন। ওই পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, সীমান্তে বি’\এস’\এফের গু’\লি’\তে নি’\হত কিশোরী ফেলানীর স্মরণে ডিপ্লোমেটিক জোন হিসেবে পরিচিত গুলশান-২ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত সড়কটির নামকরণ করা হয়েছে ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে ঘটে যায় এক হৃদয়বিদারক ফেলানী হ’\ত্যা’\কা’\ণ্ড। ভারত থেকে বাবার সঙ্গে দেশে ফেরার পথে মাত্র ১৫ বছর বয়সী এই কিশোরী বি’\এস’\এফের গু’\লি’\তে প্রাণ হারায়। গু’\লি’\বি’\দ্ধ হওয়ার পর কাঁটাতারে চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঝুলে থাকা ফেলানীর নিথর দেহ দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং সীমান্ত নিরাপত্তা ও মানবাধিকার প্রশ্নে তীব্র আলোচনা জন্ম দেয়।

এই ঘটনার পর থেকেই বিভিন্ন সামাজিক ও নাগরিক সংগঠন গুলশানে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের সামনের সড়কটির নাম ফেলানী খাতুনের নামে করার দাবি জানিয়ে আসছিল। দীর্ঘদিনের সেই দাবির ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পিপলস অ্যাক্টিভিস্ট কোয়ালিশন (People’s Activist Coalition–PAC) প্রতীকী প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সড়কটির নাম ‘শহীদ ফেলানী সড়ক’ ঘোষণা করে। ওই সময় তারা একটি অনানুষ্ঠানিক সাইনবোর্ডও স্থাপন করে।

সবশেষে, অন্তর্বর্তী সরকার এই সড়কের নাম সরকারিভাবে ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’ হিসেবে চূড়ান্ত করে। বিজয় দিবসে নামফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে যাচ্ছে, যা ফেলানীর স্মৃতি ও সীমান্তে ঘটে যাওয়া নির্মম ঘটনার প্রতি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *