ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির চোখ খুলেছে এবং মাথায় ব্যান্ডেজ দেওয়া—এমন কিছু ছবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এসব ছবি সম্পূর্ণ ভুয়া এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (জাতীয় নাগরিক পার্টি) (National Citizen Party)–এর যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা মিতু।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে নিজের ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি স্পষ্ট করে তিনি বলেন, হাদিকে ঘিরে যেসব তথ্য ও ছবি ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলোর ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হওয়া জরুরি। মাহমুদা মিতু লেখেন, হাদির মাথার হাড় বর্তমানে খুলে রাখা আছে। ফলে সেখানে চুল থাকার প্রশ্নই ওঠে না। সাধারণত ব্রেইনের অপারেশনের সময় মাথার ভেতরের চাপ কমানোর জন্য হাড় খুলে রাখা হয়, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ডিকম্প্রেশন বলা হয়।
তিনি আরও জানান, এ ধরনের প্রক্রিয়া নতুন নয়। কিছুদিন আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেও একইভাবে মাথার হাড় খুলে রাখা হয়েছিল এবং সেখানে স্পষ্ট করে লেখা ছিল—হাড় নেই, চাপ দেবেন না। পরে সেই হাড় আবার যথাযথভাবে লাগিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু হাদির চোখ খুলেছে, মাথায় ব্যান্ডেজ—এ ধরনের যে ছবিগুলো ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলো পুরোপুরি ভিত্তিহীন ও ভুয়া।
ডা. মাহমুদা মিতু বলেন, শুরুতে তিনি ভেবেছিলেন মানুষ এসব বিষয় সহজেই বুঝতে পারবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অনেক শিক্ষিত মানুষও এআই দিয়ে তৈরি ছবি শনাক্ত করতে পারছেন না। তাঁর ভাষায়, এটি অত্যন্ত ভয়াবহ একটি পরিস্থিতি—মানুষ এখন আসল ও নকলের পার্থক্য করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, এমন একটি সংকটময় সময়ে কীভাবে কারও এআই ছবি বানানোর মানসিকতা হয়। একই সঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে জানান, হাদির কোনো আইসিইউ ছবি কোনো গণমাধ্যমের কাছেও নেই, কোনো ব্যক্তির কাছেও নেই। যেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে, সেগুলো সত্য নয়।
পোস্টের শেষাংশে তিনি আবেগঘন কণ্ঠে সবাইকে অনুরোধ করেন—হাদির জন্য, তাঁর পরিবারের জন্য, তাঁদের সবার জন্য এবং দেশের জন্য দোয়া করতে। তিনি লেখেন, সবকিছু কেমন যেন অস্বাভাবিক লাগছে, আর এই সময়টায় শুধু দোয়া আর সচেতনতারই প্রয়োজন।


