বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir) বলেছেন, সম্প্রতি হাদির ওপর যে আ’\ক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, তার আ’\ক্রমণকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সে স্পষ্টতই আ’\ওয়ামী লীগের লোক। অথচ একটি পক্ষ হীন উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (Bangladesh Nationalist Party)–বিএনপিকে জড়িয়ে মিথ্যা’\চার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে যত ইতিবাচক অর্জন রয়েছে, তার সবকিছুই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির নেতৃত্বে এসেছে। এখন নতুন করে স্বপ্ন তৈরি হচ্ছে তারেক রহমানের হাত ধরে—যা দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি সতর্ক করে বলেন, একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে চায়। এ অবস্থায় আসন্ন নির্বাচন দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই নির্বাচনই নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ সামনের দিকে অগ্রসর হবে নাকি আবার পিছিয়ে পড়বে। ফখরুল আরও বলেন, ২৪-এর জুলাই যোদ্ধাদের অনেকের মধ্যেই নির্বাচন-পরবর্তী সরকারের সময় নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর শঙ্কা কাজ করছে। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে জুলাই যোদ্ধাদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ (Salahuddin Ahmed) বলেন, স্বাধীনতাকে যদি সুসংহত করা না যায়, তবে সেই স্বাধীনতা শেষ পর্যন্ত পরাধীনতায় রূপ নেবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের পর যদি জনগণ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে, তাহলে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া সম্ভব হবে না।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে অপমানিত করার চেষ্টা চলছে এবং গণতন্ত্রে উত্তরণ যেন সহজ না হয়, সে জন্য বহুমাত্রিক ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। জনগণকে সচেতন ও সক্রিয় থাকার আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান (Nazrul Islam Khan) ক্ষমতাসীন দল এবং জামায়াতে ইসলামি (Jamaat-e-Islami)–এর অতীত রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘ছাত্রদের হ’\ত্যা’\কা’\ণ্ড, মা-বোনদের ইজ্জত লুণ্ঠন এবং আমাদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনার সময় আপনারা কোথায় ছিলেন?’
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এরশাদের শাসনামলের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে নজরুল ইসলাম খান বলেন, এরশাদের সঙ্গে কারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল, তা দেশের মানুষ ভালো করেই জানে। সেই নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তই বিএনপিকে ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় নিয়ে এসেছিল। সে সময় আ’\ওয়ামী লীগ এবং জামায়াত জনগণের সঙ্গে বেইমানি করেছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নজরুল ইসলাম খান লোভের রাজনীতির কড়া সমালোচনা করে বলেন, বিগত ১৭ বছর ধরে সরকারের নি’\পী’\ড়নের মধ্যেও বিএনপি কখনোই লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে যায়নি। এখন নানা রকম লোভ দেখানো হচ্ছে—এই দুনিয়ায় না পেলে অন্য দুনিয়ায় পাওয়া যাবে। দেশের মানুষ সবকিছুই বোঝে এবং শেষ পর্যন্ত তারাই বিচার করবে। বিজয় দিবসের চেতনাকে ধারণ করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে চলার আহ্বান জানান তিনি।


