‘বাবরের পথ ধরো, সেভেন সিস্টার স্বাধীন করো’ স্লোগানে ভারতীয় হাইকমিশনের দিকে জুলাই ঐক্যের লং মার্চ

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)সহ পলাতক ব্যক্তিদের দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর দাবিতে ‘মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন’ কর্মসূচি পালন করেছে জুলাই ঐক্য (July Oikko)। এই কর্মসূচিতে ‘বাবরের পথ ধরো, সেভেন সিস্টার স্বাধীন করো’সহ নানা উত্তেজনাপূর্ণ স্লোগানে প্রগতি সরণি মুখরিত হয়ে ওঠে। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

কর্মসূচি থেকে ভারতীয় প্রক্সি রাজনৈতিক শক্তি ও কিছু সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অব্যাহত ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানানো হয়। জুলাই ঐক্যের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হস্তক্ষেপ দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর রামপুরা সেতু এলাকা থেকে লং মার্চ শুরু হয়। বিকেল ৪টার দিকে বাড্ডার হোসেন মার্কেটের সামনে পুলিশের ব্যারিকেডের মুখে পড়ে মিছিলটি। ব্যারিকেড সরিয়ে প্রগতি সরণিতে অবস্থান নেন জুলাই ঐক্যের নেতাকর্মীরা এবং সেখানে বক্তব্য দেন। লং মার্চ ঘিরে বিকেল ৩টা থেকে পৌনে পাঁচটা পর্যন্ত এ সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে।

হোসেন মার্কেটের সামনে অবস্থানকালে নেতারা বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হ’\ত্যা’\কা’\ণ্ডের সঙ্গে জড়িত সব খু’\নি ভারতে পালিয়ে গেছে। ভারত এসব সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। দ্রুত তাদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান বক্তারা।

বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দল ভারতের সঙ্গে তথাকথিত বন্ধুত্বের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়—এমন অভিযোগ তুলে বক্তারা বলেন, শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের নামে দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। এখন নতুন করে আরেকটি দল একই পথে হাঁটতে চাইছে। বক্তারা স্পষ্ট করে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এ ধরনের বন্ধুত্ব চায় না এবং এটি হতে দেওয়া হবে না।

সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়েও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন জুলাই ঐক্যের নেতারা। তারা বলেন, সীমান্তে প্রায়ই নিরীহ মানুষকে পাখির মতো গু’\লি করে নি’\হত করা হচ্ছে। এসব সীমান্ত হ’\ত্যা বন্ধের জোর দাবি জানান তারা।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহায়তার কথা স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা জানালেও বক্তারা বলেন, বর্তমানে ভারতের আগ্রাসন বন্ধ না হলে বাংলাদেশও চুপ করে থাকবে না। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ভারতের সেভেন সিস্টার অঞ্চলের স্বাধীনতার দাবিতে সহযোগিতার মাধ্যমেই অতীতের সহায়তার প্রতিদান দেওয়া হবে। তারপরও ভারতকে খুশি করতে বাংলাদেশ মাথা নত করবে না।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (University of Dhaka) ছাত্র সংসদের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ স্লোগান তোলেন—‘বাবরের (আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাজা থেকে খালাস পাওয়া বিএনপি নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর (Lutfozzaman Babar)) পথ ধরো, সেভেন সিস্টার স্বাধীন করো’। লং মার্চে অংশ নেওয়া কয়েকশ মানুষ একসঙ্গে এই স্লোগানে কণ্ঠ মেলান।

এ সময় আরও স্লোগান দেওয়া হয়—‘যে ভারত খু’\ন করে, সে ভারত ভেঙে দাও’, ‘যে ভারত হাসিনা পালে, সে ভারত ভেঙে দাও’। পরে বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে লং মার্চ শেষ করে জুলাই ঐক্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *