রাজধানীর হাজারীবাগে একটি ছাত্রী হোস্টেল থেকে এনসিপি নেত্রী জান্নাত আরা রুমীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর আগে থেকে তিনি সাইবার বুলিংসহ হুমকি-ধমকির শিকার হচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। এরই একপর্যায়ে তিনি আত্মহননের পথ বেছে নেন বলে অভিযোগ তাদের।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর জিগাতলা পুরোনো কাঁচাবাজার রোড এলাকার জান্নাতী ছাত্রী হোস্টেলের পঞ্চম তলা থেকে জান্নাত আরা রুমীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ (ধানমন্ডি থানা) সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী ছিলেন।
তার মৃত্যুর ঘটনায় দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব তারেক রেজা ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড পেজে একাধিক পোস্ট ও স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন। একটিতে সহযোদ্ধার সঙ্গে মেসেঞ্জার কথোপকথনে জান্নাত আরা রুমী লেখেন, ‘আমার জন্য অপেক্ষা করছে মৃত্যু’। এতে হুমকি-ধমকি ও সাইবার বুলিংয়ের কারণেও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকার কথা লেখেন তিনি।
তারেক রেজা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘কীভাবে লিখব বুঝছি না। আমার হাত কাঁপছে। আপনাদের মনে থাকার কথা, গত মাসে শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের দিন ধানমন্ডি ৩২-এ ফ্যাসিস্ট ও খুনি আওয়ামী লীগাররা কী সিন ক্রিয়েট করেছিল। সেখানে একজন জেন-জি নারীকে আপনারা দেখেছিলেন, এক আওয়ামী লীগারকে (যে জিয়ার কবর খুড়তে চাইছিল) পিটায়ে পুলিশের কাছে ধরায়ে দিতে।’
তিনি বলেন, ‘সেই জেন-জি নারী গত এক মাস ধরে আওয়ামী লীগের ক্রমাগত সাইবার বুলিং, হত্যা ও রেপ থ্রেটে অতিষ্ঠ হয়ে আজ রাতে আত্মহত্যা করেছেন। নাম: জান্নাত আরা রুমি, যুগ্ম সমন্বয়কারী, এনসিপি ধানমন্ডি থানা। ধানমন্ডির ভাইব্রাদারদের সাথে কথা হলো। তারা গত এক মাসে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে তার পাশে থাকার।’
সাইবার বুলিং আর ফোনকলে সারাদিন থ্রেট পাওয়ার পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাহায্য পাওয়া যায়নি অভিযোগ করে তারেক বলেন, ‘ কারোর কল্পনাতেও ছিল না, বুলিংয়ের মাত্রা এত তীব্র যে, সে আত্মহননের পথ বেছে নেবে। এটাকে আমরা আত্মহত্যা হিসেবে দেখতে রাজি নই। এটা খুন। যারা আমার বোনের জীবনকে তছনছ করে দিয়েছে, তাদের জীবন আমরা শান্তিতে কাটাতে দেব না। আমার বোনের রক্তের শপথ!’
হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম রুমীর মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘রুমী এলাকায় থাকাকালীন এনসিপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল।’ প্রাথমিকভাবে পুলিশ বলছে, রুমী আত্মহত্যা করেছে। পারিবারিকভাবে মানসিক চাপে থাকার কথা জানানো হয়েছে।


