কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পলাতক ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন, এবং তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ঢাকার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি জানিয়েছে, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখন দিল্লির জন্য সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) কংগ্রেস নেতা শশী থারুর-এর নেতৃত্বাধীন সংসদীয় কমিটি ‘ফিউচার অব ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ রিলেশনশিপ’ শীর্ষক একটি রিপোর্ট ভারতের সংসদে উপস্থাপন করে।
এই রিপোর্টের ভিত্তিতে বিবিসি বাংলা-র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিস্থিতি হয়তো সরাসরি বিশৃঙ্খলা বা নৈরাজ্যে পরিণত হবে না, কিন্তু তা মোকাবিলায় ভারতকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
রিপোর্টে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্তটি ‘মানবিকতার দৃষ্টিভঙ্গি’ থেকে নেওয়া হয়েছে। তবে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি এখন একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করছে—বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন প্রধান অগ্রাধিকার।
রিপোর্টে বিশেষভাবে ইঙ্গিত করা হয়েছে, ঢাকায় ‘মৌলবাদী শক্তির পুনরুত্থান’ এবং চীন ও পাকিস্তানের প্রভাব বিস্তারের দিকেও। কমিটির মত অনুযায়ী, প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের উচিত বাংলাদেশের পরিস্থিতি পুনর্মূল্যায়ন করা এবং কৌশলগত দিক থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করা।
প্রসঙ্গত, এই প্রতিবেদন এমন এক সময়ে প্রকাশ পেয়েছে, যখন ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক আবারও টানাপোড়েনের মুখে পড়েছে। শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান, তার ফেরত চাওয়া, এবং দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা—সবমিলিয়ে এটি কেবল একটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নয়, বরং একটি আঞ্চলিক কৌশলগত প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।


