জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) (National Citizen Party) থেকে একের পর এক নেতাদের পদত্যাগের মধ্যেও দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি পদত্যাগ করছেন না। রোববার নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, “আমি পদত্যাগ করার কোনো যৌক্তিকতা দেখছি না, যেহেতু আমি এনসিপির আনুষ্ঠানিক সব বয়ান সাবস্ক্রাইব করি। কেউ কেউ বিচ্যুত হলেও দল হিসেবে এনসিপি সঠিক অবস্থানেই ছিল।”
সাম্প্রতিক সময়ে এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামীর (Jamaat-e-Islami) মধ্যে নির্বাচনী সমঝোতা এবং জোটের ঘোষণা ঘিরে দলটির অভ্যন্তরে ব্যাপক মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় পর্যায়ের একাধিক নেতা এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছেন। তবে সামান্তা শারমিন এই সিদ্ধান্তের পেছনে যুক্তির অভাব দেখছেন।
তিনি লেখেন, “জামায়াতে ইসলামীর প্রেস কনফারেন্স থেকে জানতে পারলাম এনসিপি আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়েছে। গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের আত্মপ্রকাশের দিন এনসিপির আহ্বায়ক যা বলেছিলেন, তার সঙ্গে এই অবস্থান সাংঘর্ষিক।”
তিনি আরও বলেন, “তৃতীয় শক্তি তৈরির উদ্যোগকে ব্যাহত করে—এমন অবস্থান জাতীয় নাগরিক পার্টির মূলধারাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমি এনসিপির এতদিনের সব বক্তব্যকে ধারণ করি, স্বাগত জানাই।”
সামান্তা স্পষ্ট ভাষায় বলেন, কিছু মানুষ দলের মূল আকাঙ্ক্ষা থেকে বিচ্যুত হয়েছেন মাত্র। তার মতে, “জাতীয় নাগরিক পার্টির কিছু মানুষ কতিপয় আসনের বিনিময়ে ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে এ দলের মূল আকাঙ্ক্ষা থেকে বিচ্যুত হলো।”
তার পোস্টে জোট নিয়ে আপত্তি থাকলেও দল থেকে পদত্যাগ করার প্রয়োজনীয়তা তিনি দেখছেন না। তিনি বলেন, “আমি এনসিপির আনুষ্ঠানিক সব বয়ান সাবস্ক্রাইব করি। সেই জায়গা থেকে, আমি পদত্যাগ করার কোনো যৌক্তিকতা দেখি না।”
উল্লেখ্য, এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব মীর আরশাদুল হক ২৫ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন। এরপর ২৭ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন ডা. তাসনিম জারা। আজ দলের সিনিয়র নেত্রী তাসনূভা জাবীনও পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। দল থেকে একাধিক শীর্ষ নেতার সরে যাওয়া এনসিপির ভেতরে বিরোধ ও বিভাজনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
তবে সামান্তা শারমিনের অবস্থান স্পষ্ট, তিনি এখনো এনসিপির মূল আদর্শ ও বয়ানের সঙ্গে একমত এবং তা থেকে বিচ্যুত হননি। এই অবস্থান দলীয় অভ্যন্তরে ভিন্ন এক সুর তৈরি করল, যেখানে কেউ কেউ ক্ষোভে সরে যাচ্ছেন, কেউ কেউ রয়ে যাচ্ছেন দলীয় ম্যান্ডেট রক্ষার তাগিদে।


