বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন দমনে বিদায়ী শেখ হাসিনা সরকারের কঠোর পদক্ষেপ তথা গুম, খুন এবং বর্বরোচিত নির্যাতনের রোমহষর্ক ঘটনাগুলো তদন্তে জাতিসংঘের একটি পূর্ণাঙ্গ টিম ঢাকা আসছে। রাতে ৮ সদস্যের ওই টিমের দু’জন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বাংলাদেশে পৌঁছেছেন। বাকিরা পথে আছেন।
জাতিসংঘ টিম মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিক তদন্ত কার্য শুরু করবে। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী চার সপ্তাহ অর্থাৎ প্রায় ১ মাস তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন অকুস্থল সরজমিনে ঘুরে দেখবেন। নির্মমতার শিকার ব্যক্তি, ভুক্তভোগীদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করবেন। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ঘটনার আদ্যোপান্ত বিশ্লেষণ তথা যথাসম্ভব ঘটনার আলামত সংগ্রহ করবেন। কাজের প্রয়োজনে বাংলাদেশে তাদের অবস্থানকাল আরও দীর্ঘ হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আলামত সংগ্রহের্ পাশাপাশি তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধি, ছাত্র-জনতার প্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, দেশীয় অপরাধ বিশেষজ্ঞ এবং আইনজ্ঞদের সাথে সিরিজ আলোচনা করবেন। তদন্ত টিম খতিয়ে দেখবে ছাত্র-জনতার আন্দোলন কতটা নৃশংসভাবে দমনের চেষ্টা করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। গত জুলাই ও আগস্টের শুরুর দিকে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ ১৫ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তের ম্যান্ডেড রয়েছে জাতিসংঘ টিমের। আগামী নভেম্বরের শেষের দিকে বাংলাদেশের আপৎকালীন সরকার এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে তারা তদন্ত রিপোর্ট জমা করবেন। পরবর্তীতে রিপোর্টটি জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে।
এদিকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। রোববার দুপুরে হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। সে সময় প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম ও বি এম সুলতান মাহমুদ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহে আইন উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তিনি আশ্বস্ত করেছেন, এক সপ্তাহের মধ্যেই সম্ভবত পুনর্গঠিত (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) হবে। এরপর শুরু হবে বিচারের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া।