শান্ত থেকে দুর্দান্ত প্রতিবাদই হবে ভারতের উস্কানির জবাব

এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে বহুল আলোচিত ঘটনা আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে ভারতীয় হিন্দু উগ্র সমর্থকদের হামলা। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশন প্রাঙ্গণে হামলা চালায় হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামে একটি সংগঠনের সমর্থকরা। এই সময় হিন্দু জঙ্গিরা সহকারী হাই কমিশনের ভেতরে ঢুকে বাংলাদেশের পতাকা নামিয়ে তাতে আগুন দেন এবং সেখানে তারা ভাঙচুরও করে। ঘটনাটা যে খুব বেশি অপ্রত্যাশিত তা কিন্তু না। আবার এই ঘটনার শেষ যে এখানেই তা কিন্তু নয় , সামনে আমরা এমন আরো বেশ কিছু ঘটনার মুখুমুখি হতে থাকবো সেটা বেশ নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। এর আগেও কলকাতা ডেপুটি হাই কমিশনকে কেন্দ্র করে একই ধরনের ঘটনার চেষ্টা হয়েছিল , সেখানেও বাংলাদেশের পতাকা এবং ডক্টর ইউনুসের কুশপুতুল দাহ করা হয়েছিল, তবে সেটা এই পর্যায়ে পৌঁছেনি।

আপাদের এখন চিন্তা করতে হবে, কি উদ্দেশ্য ঘটানো হচ্ছে এমন ঘটনা এবং সে উদ্দেশ্যটা অবশ্যই আমাদের ব্যর্থ করতে হবে।

মূলত ভারত বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটা হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা বাঁধাতে চাইছে। সাম্প্রতিক সময় চিন্ময় কৃষ্ণ কে গ্রেফতার করা নিয়ে একজন মুসলিম আইনজীবীকে হত্যা করেও দাঙ্গা লাগাতে ব্যর্থ হয় ভারত , সেখানে ব্যর্থ হয়ে এখন ভারত আবারো উস্কানি দিচ্ছে এবং আমরা অবশ্যই এই উস্কানির ফাঁদে দেওয়া উচিত হবে না। ভারত চাইছে আমরা তাদের পাতা ফাঁদে পা দেই কারণ একটা দেশের হাই কমিশনে হামলা অনেক ভয়ঙ্কর একটা ব্যাপা। কোন একটা দেশের হাই কমিশন, ডেপুটি হাই কমিশন বা সহকারী হাই কমিশনের জায়গাগুলো ওই দেশের এক ধরনের সার্বভৌম ভূমি আর সেখানে হামলা মানে ওই রাষ্ট্রের উপরেই হামলা। এই হামলার মধ্যে দিয়ে ভারত একরকম ভাবে বাংলাদেশের উপরে হামলা করেছে।

আমাদের এখন চিন্তা করতে হবে তারা এখন তারা কি চাইছে? ভারত এখন চাইছে আমরাও একই রকম কাজ করি। আমরা অবশ্যি প্রতিবাদ করব কিন্তু তারা যা চাইছে আমরা তা করবো না। ভারতের হাই কমিশনে বা ভারতের অন্যান্য যে সব স্থাপনা বাংলাদেশে আছে সেগুলোতে কোনো ভাবেই যেন কোনো আক্রমণ করা না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। এমনকি বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ যেন আক্রান্ত না হয় সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখা জরুরি।

মনে রাখতে হবে, ভারত চাইছেই তাদের উস্কানিতে পা দিয়ে আমরা এমন কিছু করি যাতে দেশের ভিতর একটা অরাজকতা সৃষ্টি করা যায়।

চিন্ময়কে নিয়েও তাদের একই রকমের উদ্দেশ্য ছিল। বাংলাদেশের জনগণ তাদের সেই আশা সফল হতে দেয়নি । সুতরাং এবার যদি আমরা তাদের উস্কানিতে পা না দেই, তাহলে তাদের সেই কুচক্র সফল হতে পারবে না। কিছু কিছু মানুষ আছে যারা ভারতের প্রতি রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণা করার জন্য বসে আছেন, তাদের প্রতিও সজাগ দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। ভারতের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করা সেই সব এক্টিভিস্টদের মনে রাখতে হবে তাদের যেকোনো উস্কানিও দেশের বড় ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। তাদের কোনো কর্মকান্ডকে ব্যবহার করে দেশে যেন কোনো অরাজকতা সৃষ্টি না হয় সেদিকে তাদের খেয়াল রাখা প্রয়োজন।

ভারত যেরকম শত্রু মনোভাব আমাদের সাথে দেখাচ্ছে তা সত্যিই আনপ্রেসিডেন্টেড কিন্তু এটাই প্রত্যাশিত তবে শেখ হাসিনার পতনের পর ভারত যে এমন কিছু করবে তাতে খুব অবাক হওয়ার আসলে কিছু নেই।

আমাদের এই ক্ষেত্রে করণীয় কি তা নিয়ে নানা দ্বিমত থাকতে পারে কিন্তু দেশের স্বার্থে আমাদের সেই দ্বিমত কাটিয়ে কোনো রকম অরাজকতা ছাড়াই বলিষ্ঠ প্রতিবাদ জানাতে হবে।

এক্ষেতে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরও আরেকটু অ্যাক্টিভ রোল প্লে করা দরকার, যাতে তারাও প্রমান করতে পারে তারা শুধু আওয়ামীলীগের বা ভারতের হাতেও পুতুল না। এদেশ তাদেরও এবং দেশের প্রয়োজনে তারাও সবার সাথে কাজ করতে প্রস্তুত। যে

মনে রাখতে হবে শান্ত থেকে দুর্দান্ত প্রতিবাদই হবে ভারতের উস্কানির জবাব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *