সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে ৫ সদস্যের একটি বিশেষ দল গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুদকের ঊর্ধ্বতন সূত্র থেকে বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়।
তদন্ত দলের সদস্য
অনুসন্ধান দলের নেতৃত্বে থাকবেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন। দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন:
- উপ-পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান
- সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া
- এস এম রাশেদুল হাসান
- এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর
তারা শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বোন শেখ রেহানা এবং তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করবেন।
অনুসন্ধানের বিষয়
দুদকের দলটি আওয়ামী লীগ সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ৮টি প্রকল্পে ২১ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করবে। পাশাপাশি, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ৫৯ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির বিষয়টিও খতিয়ে দেখবে।
হাইকোর্টের নির্দেশনা ও অভিযোগের পটভূমি
এর আগে, মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
১৫ ডিসেম্বর, হাইকোর্ট একটি রুল জারি করে জানতে চায় কেন শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫০০ কোটি ডলার অর্থ লোপাটের অভিযোগে দুদকের নিষ্ক্রিয়তাকে অবৈধ ঘোষণা করা হবে না।
এর আগে, ৩ সেপ্টেম্বর জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)-এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ এই অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। রিটে উল্লেখ করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যরা মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর প্রকল্প থেকে অর্থ লোপাট করেছেন।
গণমাধ্যমে প্রতিবেদন
রূপপুর প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে গত ১৯ আগস্ট বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে গ্লোবাল ডিফেন্স করপোরেশনের তথ্যের বরাত দিয়ে বলা হয়, শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যরা রূপপুর প্রকল্প থেকে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার লোপাট করেছেন।
পরবর্তী কার্যক্রম
দুদকের গঠিত দলটি এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। দেশের জনগণ এই অনুসন্ধানের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ ও সঠিক তদন্ত আশা করছে।