সাগর-রুনি হত্যা মামলায় ফারজানা রুপাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার (Sagar Sarowar) ও মেহেরুন রুনি (Meherun Runi) হত্যা মামলায় একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপা (Farzana Rupa)-কে মামলার তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম (M A Azharul Islam) এ আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিজুল হক (Azizul Haque), সম্প্রতি তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। গত ৪ মার্চ আদালত আবেদন মঞ্জুর করে ফারজানা রুপাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। মামলার পরবর্তী প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ আগামী ১৫ এপ্রিল নির্ধারণ করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদের কারণ

আবেদনে বলা হয়েছে, হত্যাকাণ্ডের সময় ফারজানা রুপা এটিএন বাংলা (ATN Bangla)-তে রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি মেহেরুন রুনির সঙ্গে পারিবারিকভাবে ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে টেলিভিশনে রিপোর্ট করেছিলেন। তদন্ত কর্মকর্তারা মনে করছেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মামলার রহস্য উদ্‌ঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

মামলার আসামিরা ও তদন্তের অবস্থা

এ মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমান (Tanvir Rahman)-সহ মোট আটজন আসামি রয়েছেন। অন্যান্য আসামিরা হলেন—নিহতদের বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল এবং আবু সাঈদ। তবে একাধিকবার রিমান্ডে নেওয়া হলেও কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।

মামলার পটভূমি

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা (Dhaka)-র পশ্চিম রাজাবাজারে নিজেদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার পর নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানা (Sher-e-Bangla Nagar Thana)-তে হত্যা মামলা দায়ের করেন। শুরুতে মামলাটির তদন্ত পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) করলেও, চার দিন পর তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (DB Police)-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

তবে দুই মাসের বেশি সময় তদন্ত করেও ডিবি পুলিশ কোনো রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে ব্যর্থ হয়। এরপর আদালতের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল মামলার তদন্তভার র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (RAB)-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

দীর্ঘ ১২ বছর পার হলেও এখনো মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি তদন্ত সংস্থাগুলো। ২০২3 সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব র‍্যাব থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্সকে দেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *