নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার রসূলপুর ঘাটে সংঘর্ষের পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন ইয়াসিন মিয়া (২০), যিনি ছাত্রদল কর্মী ও পেশায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশাচালক।
নিখোঁজের ঘটনায় পরিবার ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা
৮ মার্চ স্থানীয় মাছ শিকারিদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর ইয়াসিন নিখোঁজ হন। এরপর থেকে পরিবারের সদস্যরা পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলেও এখনো কোনো সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ তাদের।
ইয়াসিনের মা সুলতানা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলেকে খুঁজে দিন, জীবিত অথবা মৃত, তাঁকে ফিরিয়ে দিন। আমরা তো স্বাধীন দেশের নাগরিক, তাহলে পুলিশ কেন আমাদের সাহায্য করছে না?”
সংঘর্ষ ও নিখোঁজের ঘটনা
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংঘর্ষের সময় মোট চারজন নিখোঁজ হন। পরবর্তী সময়ে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার হলেও ইয়াসিনের কোনো খোঁজ মেলেনি। এ ঘটনায় ইয়াসিনের মামা ১০ মার্চ মদন থানা একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা মাছ শিকারিরা সংঘবদ্ধভাবে খালিয়াজুরীর জলমহালে মাছ ধরছিলেন। ৮ মার্চ সকালে প্রায় এক হাজার মাছ শিকারি ধনু নদের রসূলপুর ঘাটে যান। ফেরি পারাপার নিয়ে রসূলপুর ও জগন্নাথপুর গ্রামের স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এতে শতাধিক লোক আহত হন, যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সংঘর্ষের তিন দিন পর ধনু নদ থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে লিপসার নৌ পুলিশ।
উদ্ধারকৃত মরদেহ ও ইয়াসিনের অনিশ্চিত পরিণতি
উদ্ধারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন:
– রোকন মিয়া (৪৮), পিতা মৃত আব্দুল কদ্দুছ, গ্রাম: বাগজান, ইউনিয়ন: তিয়শ্রী, মদন উপজেলা।
– শহিদ মিয়া (৫০), পিতা মৃত রুস্তম আলী, গ্রাম: রূপচন্দ্রপুর, আটপাড়া উপজেলা।
– হৃদয় মিয়া (২৮), পিতা বজলুর রহমান, গ্রাম: রোয়াইলবাড়ি, কেন্দুয়া উপজেলা।
কিন্তু ইয়াসিনের মরদেহ এখনো পাওয়া যায়নি, যা পরিবারকে চরম হতাশার মধ্যে ফেলেছে। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ প্রকাশ করে পরিবার দ্রুত তদন্ত ও সন্ধানের দাবি জানিয়েছে।