জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টির লক্ষ্যে আসন্ন বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বিকেল ৩টা থেকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এম ফজলুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রথম বৈঠক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে
আলোচনার সূচনা হবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) (Liberal Democratic Party)-র সঙ্গে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার সময়সূচি ঘোষণা করা হবে।
সূত্র জানায়, ঈদের আগে, অর্থাৎ ২৪ মার্চ পর্যন্ত এই সংলাপ চলবে। সে হিসেবে আগামী সপ্তাহে আরও দুটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে।
সংস্কার নিয়ে পূর্ববর্তী অনানুষ্ঠানিক আলোচনা
এর আগে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই বৈঠক করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা। গত এক সপ্তাহে ভিন্ন ভিন্ন দিনে এই আলোচনাগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে একাধিকবার আলোচনা করেছেন।
সূত্রের দাবি, এসব আলোচনায় তারা বোঝার চেষ্টা করেছেন—
- সংস্কার কমিশনগুলোর কোন সুপারিশ নিয়ে বড় দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।
- দলগুলো সংস্কারের বিষয়ে সামগ্রিকভাবে কী অবস্থান নেয়।
- ঐকমত্য কমিশন তথা সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি দলগুলোকে জানানো।
সূত্র আরও জানায়, গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) (Bangladesh Nationalist Party), ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টি (এনসিপি) (National Citizens Party), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (Bangladesh Jamaat-e-Islami), নাগরিক ঐক্য (Nagorik Oikya), এবি পার্টি (AB Party)-সহ বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে কমিশন আলোচনা করেছে।
আনুষ্ঠানিক আলোচনা পর্ব শুরু
জাতীয় ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বলেন—
“রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ সামগ্রিক প্রক্রিয়ারই অংশ। তবে, সংস্কার কার্যক্রমকে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক আলোচনা ২-৩ দিনের মধ্যেই শুরু হবে।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের গঠন ও সংস্কার উদ্যোগ
জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টি এবং সংবিধান ও প্রশাসনিক সংস্কারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়েছে। কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করে।
প্রথম পর্যায়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন-এর সুপারিশের ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চাওয়া হয়।
৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে সুপারিশগুলোর একটি স্প্রেডশিট পাঠানো হলেও মাত্র ১৫টি দল মতামত দিয়েছে।
এদিকে, বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ ১৪টি রাজনৈতিক দল তাদের পূর্ণাঙ্গ মতামত আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জমা দেবে বলে জানিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।