‘আলোচনা ও ঐক্যের পথেই নির্বাচনের সুরাহা সম্ভব’— প্রত্যাশা মির্জা ফখরুলের

আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঠিক করা সম্ভব— এমন আশাবাদী মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir)। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুর সফর শেষে দেশে ফিরে সোমবার সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “আলোচনা-ঐক্যের মধ্য দিয়েই নিশ্চয়ই সমাধান হবে নির্বাচনের পথরেখা।”

সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে সরব ফখরুল

এক সপ্তাহের চিকিৎসা শেষে স্ত্রী রাহাত আরা বেগমসহ দেশে ফেরেন বিএনপি মহাসচিব। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নতুন বছরকে ঘিরে আশার বাণী উচ্চারণ করে বলেন, “এবারের বৈশাখ অতীতের সব জঞ্জাল সরিয়ে এক নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।”

উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল তিনি সিঙ্গাপুরে যান চিকিৎসার উদ্দেশ্যে। এর আগে, ২০১৫ সালে কারাগারে থাকাকালীন তাঁর ঘাড়ের ইন্টারন্যাল ক্যারোটিড আর্টারিতে ব্লক ধরা পড়লে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে প্রতিবছরই নিয়মিত ফলোআপ চিকিৎসা করাতে হয় তাঁকে সিঙ্গাপুরে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বরেও সেখানে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন দম্পতি।

‘পহেলা বৈশাখে মুখোশের আড়ালে নেত্রীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার’

অন্যদিকে নববর্ষের দিন সকালে রাজধানীর পরীবাগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সরকারের সংস্কৃতি নীতির কড়া সমালোচনা করেন বিএনপির রুহুল কবির রিজভী (Ruhul Kabir Rizvi)। ‘সতীর্থ স্বজন’ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “বিগত ১৫ বছরে পরিকল্পিতভাবে এক ধরনের বিদেশি সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে আমাদের ওপর।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “এই পহেলা বৈশাখে মুখোশের আড়ালে আমাদের নেত্রী (খালেদা জিয়া) সম্পর্কে অপপ্রচার চালানো হতো। দাড়ি-টুপি পরা মানুষদের নিয়েও ষড়যন্ত্র চলেছে। কিন্তু দাড়ি-টুপি পরা মানেই কি কেউ খারাপ?”

ছাত্রদলের লড়াই আর নজরুলের প্রেরণা

ছাত্রদলের আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, “আমি কারাগারে থেকেও শুনেছি ছাত্রদের আন্দোলনের কথা। পুলিশ বলছে, ‘একজন গুলিতে পড়ে, আরেকজন দাঁড়ায়’। এই প্রাণশক্তি এসেছে নজরুল, জীবনানন্দের মতো কবিদের লেখনি থেকে।”

তার ভাষ্য, “আমরা ১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রের জন্য লড়ছি। সেই গণতন্ত্রকে নিশ্চিত করতে আর কোনো বিলম্ব করা যাবে না। এই নববর্ষেই জাতির চাওয়া— ভোটাধিকার দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়া হোক।”

ভোটাধিকার মানেই সংস্কার, কর্তৃত্ব নয়

গণতন্ত্র ও সংস্কারের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করে রিজভী বলেন, “ভোটাধিকারকে সংস্কারের অংশ হিসেবে দেখা উচিত। গণতন্ত্র নিজেই এক প্রবাহমান খরস্রোতা নদীর মতো, যেখানে কর্তৃত্ববাদের কোনো জায়গা নেই। সংস্কার মানেই তো সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।”

তিনি অভিযোগ করেন, “ফ্যাসিস্ট হাসিনা ভোটসহ সব অধিকার হরণ করে এক ব্যক্তির শাসন কায়েম করেছেন। নববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার— সেই অধিকার ফিরে পাওয়ার লড়াই জোরদার করা।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *