ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সময়মতো প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে নড়েচড়ে বসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটে ব্যবহৃত সামগ্রীর চাহিদা নিরূপণ, বাজেট পরিকল্পনা এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের মজুদ যাচাইয়ে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তর-এর কর্মকর্তারা। আলোচনায় উঠে এসেছে—নির্বাচনে ব্যবহৃত পেপারের পরিমাণ, মুদ্রণ প্রক্রিয়ার জন্য সময়সীমা এবং সামগ্রিক প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বাজেট কাঠামো কী হতে পারে।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ইসি সচিব মো. আখতার আহমেদ জানান, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় এমনভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে যেন মুদ্রণ বা সামগ্রী সরবরাহের দিক থেকে কোনো ঘাটতি না পড়ে। তিনি বলেন, “মূলত পেপার প্রকিউরমেন্ট থেকে প্রিন্টিং পর্যন্ত কত সময় লাগে, সেটাই নির্ধারণ করা হচ্ছে। মুদ্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়ায় কমপক্ষে তিন থেকে চার মাস সময় প্রয়োজন। সেই হিসেব অনুযায়ী আমরা ব্যাকওয়ার্ড ক্যালকুলেশন করছি।”
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন তারিখ ঘোষণার পর যাতে দ্রুত কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া যায়, সে লক্ষ্যে এখন থেকেই প্রস্তুতি গুছিয়ে রাখা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, একটি জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনকে মোট ২১ ধরনের ফরম, ১৭ ধরনের প্যাকেট, ৫ প্রকার পরিচয়পত্র, আচরণবিধি, নির্বাচনী প্রতীকের পোস্টার, নির্বাচন পরিচালনার ম্যানুয়েল, প্রশিক্ষণ নির্দেশিকা এবং আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী মুদ্রণ করতে হয়।
এদিকে, আগের নির্বাচনে ব্যবহৃত কিছু কাগজপত্র এখনো বিজি প্রেসে মজুদ রয়েছে। সচিব আখতার আহমেদ বলেন, “যেসব কাগজপত্র মানহীন হয়ে গেছে, সেগুলো ডিসপোজাল করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।” তিনি জানান, এসব প্রসেসের ‘লিড টাইম’ হিসেব করলে অন্তত ৩ মাস সময় লাগে। তাই এখন থেকেই পেপার কেনাকাটা এবং অন্যান্য প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরুর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, জাতীয় নির্বাচন যেন নির্ধারিত সময়মতো ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়, তার জন্য প্রশাসনিক ও লজিস্টিক প্রস্তুতির প্রতিটি ধাপে নজর দেওয়া হচ্ছে। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসুক, কমিশন যেন সময়ের চাপে না পড়ে, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পনায় কোনো শৈথিল্য রাখা হচ্ছে না।